১ জুলাইয়ের আগে শুরু হওয়া ‘সামার সেমিস্টার’ অবৈধ

  © ফাইল ফটো

চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যাগুলোকে ‘সামার সেমিস্টার’ শুরুর অনুমতি দেয় প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির অভিভাবক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় জুলাইয়ের আগে সামার সেমিস্টারের কার্যক্রম শুরু করে থাকে, তবে সেই সেমিস্টারের অনুমোদন ইউজিসি দেবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে ১০৬টি অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যার মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ডুয়েল সেমিস্টার’ (প্রতি ৬ মাসে এক সেমিস্টার) পদ্ধতির প্রচলন রয়েছে। বাকি সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ‘প্রাইম সেমিস্টার’ (প্রতি ৪ মাসে এক সেমস্টিার) সেমিস্টার পদ্ধতিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে। সে হিসেবে বছরে তিন সেমিস্টার পরিচালনা করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ‘স্প্রিং সেমিস্টার’, মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত ‘সামার সেমিস্টার’ এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘ফল সেমিস্টার’ ধরা হয়। তবে ইউজিসির নির্দেশ অনুযায়ী চলতি বছর সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সামার সেমস্টিার’ শুরু হয়েছে গত জুলাইয়ের এক তারিখ থেকে।

এ প্রসঙ্গে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সব সময় ‘ডুয়েল সেমিস্টার’ পদ্ধতিতে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার তাগাদা দিয়ে আসছি। তবে যারা চার মাসে সেমিস্টার করান তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে গত এপ্রিল মাসে অনলাইন পরীক্ষার মাধ্যমে ‘স্প্রিং সেমিস্টার’ শেষ করার অনুমতি দিয়েছি। এরপর জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে ক্লাস কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর আগে যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সেমিস্টার শুরু করে থাকে তাহলে সেটি হবে অবৈধ।

অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই মে-জুন মাস থেকে ‘সামার-২০২০ সেমিস্টার’ শুরু করেছে; তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির এই সদস্য বলেন, আমরা জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে যে সেমিস্টার শুরু হয়েছে সেটির অনুমতি দিয়েছি। এর আগে যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সেমিস্টার কার্যক্রম শুরু করে থাকে সেটি হবে সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা সেই সেমিস্টারের অনুমোদন দিব না।

তবে ইউজিসি জুলাইয়ের পূর্বে শুরু করা সেমিস্টারের অনুমোদন না দিলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খুব একটা সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খাত সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, ইউজিসি নোটিশ দিয়ে ‘ডুয়েল সেমস্টিার’ পদ্ধতি চালু করতে গত জানুয়ারিতে চিঠি দিলেও সেটি প্রায় কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই মানেনি। বছরে তিনটি সেমিস্টার মূলত ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যেই এদেশে চালু করা হয়েছে। যেটি রোধে ইউজিসি পুরোপুরি ব্যর্থ। তাই সেমিস্টারের অনুমোদন না দিলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর খুব একটা সমস্যা হবার কথা নয়।

পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে সেমিস্টার ফাইনালের গ্রেড নয়

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউজিসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে তিন সেমিস্টার পদ্ধতির লাগাম টানার উদ্যোগ নিয়েও অনেকটা ব্যর্থ হয়েছে। কমিশন দুই সেমিস্টার পদ্ধতির নির্দেশনা দিয়ে ইতোমধ্যে দুই দফা সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। আর নতুন যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলোতে শুরু থেকেই দুই সেমিস্টার পদ্ধতি চালুর নির্দেশ দিয়েছে। তবে সেটিকে এক প্রকার বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বছরে তিন সেমিস্টার পদ্ধতিতেই পাঠদান চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।


সর্বশেষ সংবাদ