০২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:৪২

আইআইইউসি শিক্ষকদের মুক্তি দাবি শিক্ষার্থীদের

বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুরের অভিযোগে কারাগারে পাঠানো চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) চার শিক্ষকের মুক্তি দাবি করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ওই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না থেকেও অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।

ওই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষককে কারাগারে পাঠিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। শিক্ষকরা হলেন- মাহবুব রহমান, কাউছার আহমেদ, মোহাম্মদ শফিউল আলম ও নিজাম উদ্দিন। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে।

একই মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আ ন ম শামছুল ইসলাম ও জামায়াত সদস্য আহসান উল্লাহকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তবে অভিযুক্ত চার শিক্ষক ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা জানান, গত ২৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একছাত্রকে ‘বুয়েট ছাত্র আবরার স্টাইলে’ মারধর করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

পরেরদিন সকাল থেকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠিরা ক্যাম্পাসে আন্দোলন করতে শুরু করে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। পরে বাধ্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় ও হল অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।

ছাত্ররা জানান, ওই দিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গুজব তুলে- তাদের অফিসে ‘ছাত্রশিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা’ এসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করেছে।’ এদিকে এই ভাঙচুরের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা অভিযোগের তীর ছুড়ছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। 

সুইডেন প্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ-এমবিবিএ করার সুবাধে মাহবুব স্যারের সাথে পরিচয়। স্যার কতটা বন্ধুত্বপূর্ণ আর সাহায্যকারী ছিলেন সেখানে পড়াশোনাকালীন সময়ে বুঝতে পেরেছি। যেকোন সমস্যা নিয়ে স্যারের কাছে গেলে স্যার সাধ্যমত চেষ্টা করতেন সমাধান করার জন্য।’

গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে সীতাকুণ্ড থানায় চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুরের অভিযোগে চার শিক্ষকসহ প্রায় ৭০ জনের নামে মামলা করেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা কামাল উদ্দিন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষক ও দুই জামায়াত নেতার নাম উল্লেখ করে ৬০-৭০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

এদিকে মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৯ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা। খবর পেয়ে তিনি ক্যাম্পাসে গিয়ে ছবি ভাঙচুরের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে শিবির ক্যাডাররা তাকে হত্যা করে লাশ গুমের হুমকি দেয়।