১১ জুন ২০২০, ১৬:৫৬

অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে আত্মহত্যা করেন ড্যাফোডিল ছাত্র: বাবা

লোগো  © ফাইল ফটো

‘অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দিতে না চাওয়ায় আমি আমার ছেলেকে একটু বকাঝকা করি; আর বিষয়টি নিয়ে আমার স্ত্রীর সাথেও রাতে আমার ঝগড়া হয়। এই ক্ষোভেই আমার ছেলে ও স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন’— কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিতাই চন্দ্র বর্মণ।

বুধবার (১০ জুন) বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতকের শিক্ষার্থী রবীন্দ্র চন্দ্র বর্মণ (২২) ও তাঁর মা সরস্বতী বর্মণ (৪৭) বিষপানে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার কারণ জানাতে গিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের কাছে এসব কথা বলেন শিক্ষার্থী রবীন্দ্র চন্দ্রের বাবা নিতাই চন্দ্র বর্মণ।

নিতাই চন্দ্র বর্মণ জানান, আমার ছেলে করোনার ছুটিতে বাড়িতে আসে। অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আমি তাকে ওয়াইফাই লাইনের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলি। তবে আমার ছেলে বলে যে; সে ঢাকায় গিয়ে লিখিতভাবে পরীক্ষা দিতে চায়। আমি নিষেধ করি। এতে রবীন্দ্রের সাথে আমার মনোমালিন্য হয়। রাতে এই বিষয়ে ওর মাও আমার সাথে ঝগড়া করে।

কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, প্রতিদিনের মতো বুধবার (১০ জুন) সকালে আমি আমার কাজে বের হয়ে যাই। পরে শুনতে পারি ওরা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। এখন আমার আর কেউ রইলো না। আমার এখন বেঁচে থেকে কী লাভ। এই সামান্য কারণে মা-ছেলে আমার উপর অভিমান করে এমন পদক্ষেপ নেবে এটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি।

জানা গেছে, বুধবার (১০ জুন) বিকালে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার আমষট্ট গ্রামের বাড়ির কাছে জঙ্গলে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন ছেলে রবীন্দ্র চন্দ্র বর্মণ ও তার মা সরস্বতী বর্মণ। পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে মা এবং রাতে হাসপাতালে ছেলে মারা যান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, নিহত রবীন্দ্র চন্দ্র বর্মণ রাজধানীর ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। প্রাথমিকভাবে আমরা জেনেছি পারিবারিক কলহের কারণেই মা-ছেলে আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনায় নিতাই চন্দ্র বর্মণের মেয়ে ডলি রানী বর্মণ দুপচাঁচিয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন।