শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বেতন কমাল ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ১৭ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সবশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে দেশের অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষা কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালনা করছে। তবে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে নিয়মিত ক্লাস নিলেও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পুরো বেতন দিচ্ছে না। এমনকি বেতন সংক্রান্ত পূর্বের চুক্তিও বাতিল করছে কর্তৃপক্ষ। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
সূত্র বলছে, ‘রিভিশন অব এমপ্লয়মেন্ট এগ্রিমেন্ট’— সম্প্রতি এমন শিরোনামে একটি নোটিশ শিক্ষকদের মেইলে পাঠিয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়টি। হিউম্যান রিসোর্স থেকে পাঠানো ওই মেইলে শিক্ষকদের আগের সব চুক্তি বা স্কেল বাদ দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে শিক্ষকরা এটিকে ‘যতটুকু কাজ, ততটুকু বেতন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, এই নিয়ম শুধু শিক্ষক নয়, বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সবার জন্য প্রযোজ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউমেনেটিস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্স অনুষদের এক শিক্ষক জানান, করোনা পরিস্থিতিতে আমরা অনলাইনে নিয়মিত ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট ও প্রেজেন্টেশনসহ সব নিয়েছি। অথচ শিক্ষার্থীরা টাকা দিচ্ছে না, ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করানো যাচ্ছে না বলে আমাদের বেতন কম দেয়া হচ্ছে। এপ্রিল মাসে আমাদের ৫০ শতাংশ বেতন দেয়া হয়েছে। এই মাসে দেয়া হয়েছে ৭০ শতাংশ।
ওই শিক্ষক বলেন, আমাদেরকে হিউম্যান রিসোর্স সেন্টার থেকে মেইল পাঠানো হয়েছে। সেখানে আমাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের আগের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। নতুন চুক্তিতে আমরা যতটুকু কাজ করব; ততটুকু বেতন দেয়া হবে বলে জানানো হয়। আমরা এই চুক্তিতে রাজি আছি কিনা— সেটা জানতে একটি ফরম পূরণ করতে বলা হয়েছে।
ওই শিক্ষক আরো বলেন, এটি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিবাদ করে কেউ চাকরি হারাতে চাইবে না। আমাদের এই নিয়ম মেনে নেয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় অর্থ সংকটে রয়েছে, তারা বেতন কম দিলে একটা যুক্তি থাকত। কিন্তু ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থী সংখ্যা অনেক বেশি। করোনাকালীন সময়ে তাদের এই আচরণ খুবই অমানবিক।
চলতি মাসে শিক্ষকদের ৭০ শতাংশ বেতন দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির মুখপাত্র ও স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, এটি করার কারণ হলো অনেক শিক্ষক কীভাবে অনলাইনে ক্লাস নিতে হয়— সেই ট্রেনিং নেয়নি। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই সাময়িকভাবে শিক্ষকদের বেতন কম দেয়া হয়েছে। শিক্ষকরা ট্রেনিং সম্পন্ন করে তাদের অবস্থার উন্নতি ঘটালে বেতনের বাকি অংশ দেয়া হবে।
চুক্তি বা স্কেল বাতিলের বিষয়টি ঠিক না জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আমাদের এই মেইলটি শুধু শিক্ষকদের জন্য নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সকলের জন্য। এই নোটিশ নিয়ে শিক্ষকদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই। এটি করা হয়েছে যারা করোনাকালীন সময়ে একেবারে কাজ না করে বসে আছে তাদের জন্য।