ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি সমাবর্তনে উচ্ছ্বসিত ১৮০০ শিক্ষার্থী
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ষষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৮০০ শিক্ষার্থী সমাবর্তনে অংশ নেয়। এসময় ব্যাপক উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যায় শিক্ষার্থীদের মাঝে। আজ শনিবার (১৬ নভেম্বর) সাভারের আশুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে সমাবর্তন।
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহীবুল হাসান চৌধুরী। চারটি অনুষদ থেকে সর্বোচ্চ সিজিপিএ প্রাপ্ত নয়জন শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দেয়া হয়।
সমাবর্তন বক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মিজ জোয়েন ওয়্যাগনার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। অতিথির বক্তব্য দেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন মোগল। ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন স্বাগত বক্তব্য দেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সনদ ও গোল্ড মেডেলপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহীবুল হাসান চৌধুরী বলেন, এই অর্জনের সুফল দেশ ও জাতির উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। তিনি উচ্চশিক্ষার প্রসারে সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার কথা উল্লেখ করেন।
চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মিজ জোয়েন ওয়্যাগনার সব শিক্ষার্থীকে বৈশ্বিক নাগরিক হয়ে ওঠার আহ্বান জানান। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ সব বিশ্ববিদ্যালয়কে সরকারি বিধি-বিধান মেনে চলার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, সুনাম রক্ষার জন্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিজেদেরই তাগিদ ও চেষ্টা থাকতে হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন বলেন, নবনির্মিত ক্যাম্পাসে সমাবর্তন অনুষ্ঠান করার বিষয়টি খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারি, বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমগুলোর সাংবাদিক ভাইবোনদের আন্তরিক সমর্থন ও সহযোগিতার কারণে তা সম্ভব হয়েছে। এ জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
শেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক তাহমিনা আহমেদ।
২০১৬ সালের ফল সেমিস্টার থেকে এ বছরের সামার সেমিস্টার পর্যন্ত ২৯৭২ জন শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েশন করেছেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে। তাদের মধ্য থেকে প্রায় ১৮০০ শিক্ষার্থী অনুষ্ঠানে সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন। চারটি অনুষদ থেকে নয়জন শিক্ষার্থী এ বছর স্বর্ণপদকের জন্য মনোনীত হন। তাদের মধ্যে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল পান দুজন- নওশীন রহমান ও শ্রাবণী সরকার। তাঁরা দুজনই ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের শিক্ষার্থী। স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত তিনজনকে দেয়া হয় চেয়ারম্যানস গোল্ড মেডেল। তাঁরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের সাদিয়া আফরিন, ব্যবসায় প্রশাসনের অনন্যা ইসলাম এবং আইন বিভাগের নুশেরা তাজরিন দারিন।
চার অনুষদ থেকে স্নাতক ডিগ্রিপ্রাপ্ত চারজন পান ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল। তাঁরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের দেবিকা সিনহা গার্গি, ব্যবসায় প্রশাসনের মো. নাজমুল ইসলাম জিহাদ, প্রকৌশল ও কারিগরি বিভাগের মো. তারেক ও আইন বিভাগের মাসুমা দিল আফরোজ।
উচ্চশিক্ষায় গুণগত মান ও নেতৃত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে বর্তমানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। চারটি অনুষদ এবং সেসব অনুষদের অধীনে ৯টি প্রোগ্রাম আছে। মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং অনন্য প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশের কারণে অল্প সময়ের মধ্যে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। এখান থেকে এরই মধ্যে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী কৃতিত্বের সঙ্গে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম ও ক্রেডিট ট্রান্সফারের ব্যবস্থা আছে।