ইডিইউতে নৈতিকতা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শীর্ষক সেমিনার
মানুষ বর্তমানে প্রযুক্তির উপর অনেকটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামী পৃথিবী হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের। এই ভবিষ্যৎবাণী যেমন আশার সঞ্চার করে, একইসাথে তা মানবজাতির জন্য হুমকিস্বরূপ। কেননা, সীমাহীন ক্ষমতার অধিকারী হয়ে তা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
প্রযুক্তির সম্ভাবনাময় এই খাত এবং এর নৈতিক দিকটি নিয়ে ‘এথিকস এন্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ শিরোনামে সোমবার (১৫ জুলাই) ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে (ইডিইউ) এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাকোয়ারি ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে এ সেমিনারটি আয়োজন করে।
এতে মূল আলোচক ছিলেন ম্যাকোয়ারি ইউনিভার্সিটির বিজনেস স্কুলের অ্যাসোসিয়েট ডিন প্রফেসর ড. ফিলোমেনা লিয়াং। তাকে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন ইডিইউর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আপ টু ডেট করে তোলা ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির দায়িত্ব। সে দায়িত্ব আমরা পালন করছি। একই সাথে শিক্ষার্থীদের নৈতিক দিক উন্নত করতেও সচেষ্ট আমরা। এ লক্ষ্যে আমাদের নিয়মিত ফ্যাকাল্টি মেম্বারদের পাশাপাশি বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিশেষজ্ঞরাও নিয়মিত ক্লাস-সেমিনার পরিচালনা করছেন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নৈতিক দিক সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে প্রফেসর ড. ফিলোমেনা লিয়াং বলেন, কম্পিউটার বা রোবট যদি মানুষের মতো চিন্তা করে এবং নিজেই নিজের সিদ্ধান্ত নেয়া শুরু করে, তবে তা নৈতিক দিক থেকে আশঙ্কাজনক হতে পারে। এ ধরণের প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে বেকারত্বের হার বেড়ে গিয়ে সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করবে। তাছাড়া এ ধরণের বুদ্ধিমত্তাকে সামাজিক ক্ষতিসাধনে ব্যবহারের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না।
মানুষের মতো চিন্তা-আচরণ করলেও, যেহেতু তারা মানুষ নয়, তাই সামাজিক নিয়মকানুন ও আইনগুলো তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না, ফলে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনাও দুরূহ হয়ে পড়বে। তাছাড়া মানুষের গোপনীয় ও ব্যক্তিগত বিষয়গুলো হুমকির সম্মুখিন হতে পারে। এসব নেতিবাচক দিক ছাড়াও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ইতিবাচক সম্ভাবনাও কম নয়। তাই মানবিক দিক থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরিতে ও ব্যবহারে মাত্রাজ্ঞান রাখা জরুরি।
সেমিনারে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেন ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অ্যাসোসিয়েট ডিন ড. মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। তিনি বলেন, মানুষের মতো আচরণ ও চিন্তা করতে পারে যে প্রযুক্তি, তাই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। রোবট, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যালেক্সা, সিরি প্রভৃতি এ ধরণের প্রযুক্তি।
ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে ইডিইউর স্কুল অব বিজনেসের অ্যাসোসিয়েট ডিন ড. মুহাম্মদ রকিবুল কবির বলেন, হিসাবরক্ষণ থেকে শুরু করে আর্থিক বিবরণ প্রস্তুত, ডাটা বিশ্লেষণ কিংবা পণ্য তৈরি- এসব ফর্মুলানির্ভর কাজে ইতোমধ্যে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। এই প্রযুক্তির আওতা নিরাপদ পর্যায়ে বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করছে বিজ্ঞানীরা।