১২ দেশের ছাত্রী নিয়ে এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন শনিবার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ মে ২০১৯, ১১:২৪ AM , আপডেট: ০৫ মে ২০১৯, ১১:২৪ AM
বিশ্বের ১২টি দেশের ছাত্রীদের নিয়ে ৭ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডাব্লিও)। যুক্তরাষ্ট্র, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ভারত, ভুটানসহ দেশগুলোর প্রায় ১০০ ছাত্রী এ সমাবর্তনে অংশ নেবেন।
আগামী ১১ মে শনিবার পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লু’র মেজবান হলে এ সমাবর্তনের আয়োজন করা হবে। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডাব্লিও) কনফারেন্স রুমে আয়োজিত ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান এইউডাব্লিওর রেজিস্ট্রার ড. ডেভ ডোল্যান্ড।
এবারের সমাবর্তনে উপস্থিত থাকবেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডাব্লিও) আচার্য চেরি ব্লেয়ার এবং বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে থাকবেন আফগানিস্তানের অর্থমন্ত্রী অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কাইয়ুমী এবং বরেণ্য রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। সমাবর্তনে অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কাইয়ুমীকে ‘ডক্টরেট অব লজ’ এবং অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে ‘ডক্টরেট অব আর্টস’ ডিগ্রি দেবে এইউডাব্লিও।
অনুষ্ঠানে এইউডাব্লিও উপাচার্য অধ্যাপক নির্মালা রাও বলেন, অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ন কাইয়ুমী এবং অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা সমাবর্তনে তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসাধারণ কার্যক্রম ও অর্জন সবার সামনে তুলে ধরবেন। সমাবর্তনে যারা সনদ অর্জন করবে তারা দুইজন অনন্য রোল মডেলের সাহচর্য্য পাবে। তাদের মতো অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সাহসী হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করে। এ অঞ্চলে এটিই প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নারীদের শিক্ষা, নেতৃত্ব উন্নয়ন ও বিকাশে অবদান রাখছে। পাশাপাশি এমন সব নারীদের জন্য কাজ করছে যাদের মধ্যে রয়েছে অসাধারণ শিক্ষার সম্ভাবনা, সাহসী মনোভাব এবং সকল প্রকার অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে গিয়ে সমাজ তৈরিতে নিজেদের অপার আগ্রহ।
অধ্যাপক নির্মলা রাও বলেন, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে বর্তমানে ৮০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে আগামী ১০ বছরের মধ্যে এটি তিন হাজারে উন্নীত করার পরিকল্পনা আছে।
মার্কেটিং ও স্টুডেন্ট রিক্রুটমেন্ট ডিরেক্টর সুমন চ্যাটার্জি বলেন, ‘স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের সায়েন্সের বিভিন্ন দিক নিয়ে আগ্রহী করে গড়ে তুলতে এ জন্য আমরা সায়েন্স সামার স্কুল চালু করছি। এর মাধ্যমে ৫ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত এক মাসের আবাসিক ক্যম্প করবো আমরা।
তিনি বলেন, এখানে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, এমআইটি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্স স্কলাররা শিক্ষার্থীদের পড়াবেন। ভালো ফল অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের এইউডাব্লিও-শেভরন-এমআইটি স্কলারশীপ দেওয়া হবে। প্রত্যেককে দেওয়া হবে সনদ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন সাপোর্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী কামাল আহমেদ, অ্যাডমিশন ডিরেক্টর রেহানা খান এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট এর প্রধান আমিনা চৌধুরঅ। এইউডাব্লিও নিয়ে নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন স্টুডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ মুনতাহা চৌধুরী, ফিরোজা খাতুন ও কারিমা খান।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান স্টুডেন্ট গর্ভনমেন্ট এর প্রেসিডেন্ট মুনতাহা চৌধুরী বলেন, ৪ বছর আগেও কারো সামনে দাঁড়িয়ে কিছু বলার সাহস পেতাম না। আর আজ আপনাদের সবার সামনে দাঁড়িয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান স্টুডেন্ট গর্ভনমেন্ট এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছি, বক্তব্য রাখছি। আমাকে তৈরি করেছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর বিতর্ক দলের প্রেসিডেন্ট কারিমা খান নারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, লক্ষ্যে পৌঁছা না পর্যন্ত কখনো নিজের স্বপ্ন দেখা বন্ধ করবে না। স্বপ্নই মানুষকে বড় করে। লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে।
পোশাক কারখানা থেকে এইউডাব্লিওতে পড়তে আসা ফিরোজা খাতুন বলেন, চরম দারিদ্রতার কারণে এইচএসসি পাশ করার পর আমার পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য আমি চট্টগ্রাম চলে আসি। ইয়ং ওয়ান পোশাক কারখানায় চাকরি নিই।
তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করার। একদিন শুনলাম এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান পোশাক কারখানার শ্রমিকদেরকেও লেখাপড়া করার সুযোগ দিচ্ছে। বেতন দিচ্ছে। তখনই আমি ভাবি- স্বপ্ন পূরণে আমাকে ঠেকায় কে? এখন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে স্নাতক ২য় বর্ষে পড়ছি।