ডিআইইউতে আন্দোলনের মুখে ইইই বিভাগের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ, কর্মবিরতি শিক্ষকদের
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আব্দুল বাসেদ পদত্যাগ করেছেন। একই সঙ্গে বিভাগের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত উত্তাল হয়ে ওঠে ইইই বিভাগ। কয়েক ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে ১১ দফা দাবি তোলে এবং চেয়ারম্যান পরিবর্তনের দাবিতে স্লোগান দেয়। আন্দোলনের চাপেই অবশেষে পদ ছাড়েন অধ্যাপক বাসেদ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিভাগ পরিচালনায় অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, রাজনৈতিক প্রভাব ও এককভাবে সিদ্ধান্তগ্রহণ দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। একই ব্যক্তি দুই বিভাগের চেয়ারম্যান হওয়া, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনীহাপূর্ণ আচরণ ও পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্তও তাদের ক্ষোভ বাড়ায়।
তাদের দাবি, বিভাগের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য একজন অভিজ্ঞ, নিরপেক্ষ ও ইইই ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষককে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।
অধ্যাপক বাসেদ জানান, বিভাগের দুই শিক্ষিকাকে ঘিরে পুরোনো একটি সমস্যাই বর্তমান পরিস্থিতির সূত্রপাত। তবে আন্দোলনকারীরা একে ‘হুমকি’ হিসেবে দেখেছে।
অন্যদিকে আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীরা সাবেক চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ তারেককে নতুন চেয়ারম্যান করার দাবিও তোলে। এ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে শিক্ষক মহলে। কেউ কেউ বলছেন, তারেকের ছত্রছায়াতেই শিক্ষার্থীরা মব তৈরি করেছে। তবে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে এটিকে “প্রতিবিপ্লব” আখ্যা দিয়েছেন।
শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, আন্দোলন চলাকালে তারা অসম্মানিত হয়েছেন। তাই কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রভাষক হাসিবুল হাসান ভূঁইয়া আবিদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না হলে আমরা সবাই পদত্যাগ করব।’
তবে সাবেক চেয়ারম্যান তারেক দাবি করেছেন, শিক্ষক পদত্যাগের খবর সঠিক নয়। তারা কেবল ইভিনিং শিফটে ক্লাস না নেওয়ার সিদ্ধান্তে সই করেছেন।
চেয়ারম্যান পদত্যাগ করলেও ইইই বিভাগের সংকট কাটেনি। শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকায় ক্লাস কার্যক্রম অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা এখন দিশেহারা—বিভাগের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে, তা নিয়েই চলছে জল্পনা।