০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:৪০

ত্রিপুরায় দূতাবাসে ভাঙচুর-পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদ র‌্যালি

দূতাবাসে ভাঙচুর-পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদ র‌্যালি  © সৌজন্যে প্রাপ্ত

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী দূতাবাসে ভাঙচুর এবং জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনায় উদ্বেগ এবং নিন্দা জানিয়েছে বেসরকারি পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা। রবিবার (০৮ ডিসেম্বর) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শাসনামলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে বগুড়া জেলার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়েছে। র‌্যালিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেছেন।

র‌্যালিটি নগরীর মাটিডালি হয়ে সাতমাথা দিয়ে বগুড়া ডিসি অফিসে গিয়ে শেষ হয়। এরপর জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজাকে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোতাসিম বিল্লাহ জিহাদ, ইংরেজি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম এবং কম্পিউটার সাইন্স ইঞ্জিনিয়ারিং, ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রুবাইয়া রিফাত রিয়া। 

স্মারকলিপিতে তারা বাংলাদেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীরা গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। 

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিতকল্পে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠাকরণ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি দূরীকরণে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিশ্বাস করে যে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে একটি সাম্য ও শান্তিপূর্ণ অবস্থানসহ সমাজ গঠনে বর্তমান সরকার বাস্তব ও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

আরও পড়ুন: নতুন শিক্ষার্থী ভর্তিতে ফের নিষেধাজ্ঞার মুখে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি

আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দেশের জনগণের সার্বিক কল্যাণে দেশকে উন্নয়ন সমৃদ্ধ করার জন্য দেশের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরার আহ্বান জানাচ্ছি। সাম্প্রতিককালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী দূতাবাসে ভাঙচুর এবং জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ এবং এর তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে যথাযথ কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং ভারত সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে—জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ একটি উদার ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র জানিয়ে তারা বলেছেন, আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং ধর্মীয় সহাবস্থান বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য দেশের বেকারত্ব দূরীকরণ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সকলের কাম্য। জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। এই বিষয়ে সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানাই এবং ভবিষ্যতেও দেশ বিরোধী চক্রান্ত রুখে দিতে ও দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতি দেশ প্রেমিক-নাগরিক হিসাবে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

র‌্যালিতে শিক্ষার্থীদের সাথে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হোসনে-আরা বেগম, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. চিত্তরঞ্জন মিশ্র, বিওটি ভাইস চেয়ারম্যান রোটা. ডা. মো. মতিউর রহমান, সম্মানিত সদস্য আয়শা বেগম, ফয়জুন নাহার, রাকিবা সুলতানা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর মুহা. সুজন শাহ-ই-ফজলুল, পরিচালক (অর্থ) আবু জাহিদ মো. জগলুল পাশা, রেজিস্ট্রার ড. এস. জে. আনোয়ার জাহিদ, বিওটি সমন্বয়ক খোরশেদ আলম, উপপরিচালক (জনসংযোগ ও প্রশাসন) মো. জাহেদুল আলম, টিএমএসএস এর প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জি. হাবিবুর রহমান, টিটিইআই এর অধ্যক্ষ ইঞ্জি. মো. রিহান ইসলাম, টিএমএসএস ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এর অধ্যক্ষ মো. ইসরাইল হোসেনসহ পুণ্ড্র বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা।