জুলাই বিপ্লবে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির মারাত্মক বিপর্যয় হয়েছে: মাহমুদুর রহমান
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৯ PM , আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৭ PM
জুলাই বিপ্লবে হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনের পতনের মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির মারাত্মক বিপর্যয় ঘটেছে। এই পরাজয় ভারত সহজে মেনে নেবে না, ষড়যন্ত্র চলছে- বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
আজ ২৯ নভেম্বর ২০২৪ (শুক্রবার) আশুলিয়ায় মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত চতুর্থ এমআইইউ মিডিয়া অলিম্পিয়াডে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ দিনব্যাপী এ বর্ণাঢ্য আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রধান রফিকুজ্জামান রুমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার ছিলেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মো. ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আমার দেশ সম্পাদক বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের অনুসারীরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। তাই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা তার প্রভুর দেশ ভারতে পালিয়ে গেছে। তবে সেখানে বসেই তিনি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন।’
তিনি দেশের মূলধারার মিডিয়ার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘পশ্চিমা মিডিয়ার ইসলামোফোবিয়া কঠোরভাবে অনুসরণ করছে এ দেশের গণমাধ্যম। ইসকন ইস্যুতে দেশের মূলধারার মিডিয়া ছাড়া বিবিসি ও রয়টার্সের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম একপেশে এবং বিভ্রান্তিকর শিরোনামে সংবাদ পরিবেশন করছে। পাশাপাশি ভারতীয় গণমাধ্যমও ভ্রান্ত সংবাদ প্রকাশ করে। কিন্তু দেশের মিডিয়া হাউজগুলো তার প্রতিবাদ করেনি। কারণ স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে ভারতীয় আধিপত্যের নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। যে কারণে যথেষ্ট যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আমার দেশ-এর মতো স্বতন্ত্র মিডিয়া হাউজগুলোকে টিকে থাকতে দেয়া হয়নি।’
দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, ‘ভারতীয় গণমাধ্যম 'গদি মিডিয়ায়' বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণায় লিপ্ত রয়েছে পিনাক রঞ্জন, বীণা সিক্রির মত বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক হাইকমিশনাররা।’
বাংলাদেশকে নতুন করে পথ দেখানো তারুণ্যের কাছে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিরাপদ উল্লেখ করে ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আগামী ২২ ডিসেম্বর থেকে প্রকাশিত হবে দৈনিক আমার দেশ। যেখানে থাকবে জুলাই আগস্ট বিপ্লবের চেতনার বহিঃপ্রকাশ। আমার দেশ পত্রিকা আগের মতোই কথা বলবে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে।’
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রথমার্ধে সকালে চতুর্থ মিডিয়া অলিম্পিয়াডের গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয়। পরে এতে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে গণমাধ্যম ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উপদেশমূলক বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের জনপ্রিয় সাংবাদিক, উপস্থাপক ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। দ্বিতীয়ার্ধে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ বক্তব্য দেন সবশেষে পুরস্কার বিতরণী ও জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত 'জেএমএস টাইমস' পত্রিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
চতুর্থ মিডিয়া অলিম্পিয়াড উপলক্ষ্যে রং-বেরংয়ের ফেস্টুন, ব্যানার, পতাকা ও নজরকাড়া আলপনায় সাজানো হয় অনুষ্ঠানস্থল-সহ ক্যাম্পাস এলাকা। এবারের মিডিয়া অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে সারাদেশ থেকে প্রায় দুই হাজার উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে অনলাইনে পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই করে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে গ্র্যান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ প্রতিযোগীদের নগদ অর্থ, স্মারক ও সনদসহ ১০ লাখ টাকার পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এতে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের লামিয়া ইসলাম হিমু প্রথম স্থান অর্জন করেন। তাকে ক্রেস্ট, সনদ ও ২৫ হাজার টাকা অর্থ পুরস্কার পান। ঢাকা কমার্স কলেজের মো. নাজমুল হাসান খান দ্বিতীয় হয়ে ১৫ হাজার টাকা অর্থ পুরস্কার পান। তৃতীয় হন ঢাকা সিটি কলেজের মামুনুর রশিদ। তিনি পান ১২ হাজার টাকা।
এতে স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ডিন প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান ও রেজিস্ট্রার ড. মো. মোয়াজ্জম হোসেনের উপস্থিতিতে অন্যদের মাঝে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন জনপ্রিয় সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট সাইয়্যেদ আব্দুল্লাহ, বিশিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এএমডি আবু রেজা ইয়াহিয়া প্রমুখ।
সিনিয়র অ্যাসিসট্যান্ট রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম রিমনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে দেশাত্মবোধক গানসহ মনোজ্ঞ সঙ্গীত পরিবেশন করেন সুস্থধারার জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ওবায়দুল্লাহ তারেক, হামিম জাবির, আল আমিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক মানবজমিন, এমআইইউ ক্যাম্পাস টিভি।