সৌর শক্তি থেকে বিদ্যুৎ সংরক্ষণের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে প্রথম গবেষণাগারের যাত্রা শুরু
সৌর শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর তা সংরক্ষণের সুযোগ রেখে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অ্যাডভান্স সোলার ল্যাবের যাত্রা শুরু হয়েছে। শনিবার (৯ নভেম্বর) বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ইউআইইউ) এ ল্যাবের উদ্বোধন করা হয়। বহুজাতিক প্রযুক্তি পণ্য প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের অর্থায়নে ইউআইইউ’র বিশেষায়িত গবেষণার সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ সেন্টারে (সিইআর) এ ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
হুয়াওয়ের অর্থায়নে ইউআইইউতে প্রতিষ্ঠিত এ ল্যাবের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো টেকসই সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা। এছাড়াও এখানে বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী হুয়াওয়ে এবং সিইআর, ইউআইইউ সম্মিলিতভাবে বিভিন্ন কোর্স ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে। এসব প্রশিক্ষণ ও কোর্সের বিষয়বস্তুতে নবায়নযোগ্য শক্তি টেকনোলোজি, গবেষণা, ডিজিটাল শক্তি এবং স্মার্ট এনার্জি সলিউশনের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এটি বাংলাদেশে প্রথম ল্যাব, যার অধীনে নবায়নযোগ্য শক্তি সংরক্ষনের সুযোগ থাকবে।
অনুষ্ঠানে ‘ভবিষ্যত জ্বালানি নির্দেশনায় স্মার্ট গ্রিড’ নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ইউআইইউ’র সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী। বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা ২০১০ সালে ইউআইইউতে সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ (সিইআর) প্রতিষ্ঠা করি। এখানে আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ক সব ধরনের গবেষণা এবং নীতিমালা নিয়ে কাজ করছি। আমাদের সাথে সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে।
সরকারের জ্বালানি নীতিমালা সিইআর অন্যতম সহযোগী জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ দেশি-বিদেশি ৯টিরও বেশি অ্যাওয়ার্ড আমরা অর্জন করতে পেরেছি। স্মার্ট গ্রিড নিয়ে আমরা ২০০৮ সালে জাতীয় পর্যায়ে সেরার পুরস্কার পেয়েছি। আমি হুয়াওয়কে কৃতজ্ঞতা জানাই, এখানে তারা ল্যাব স্থাপনে আমাদের সহায়তা করেছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশ এবং চীম একসাথে কাজ করছে৷ এটি আরও বাড়াতে চীন কাজ করছে বলেও জানান।
চীন তার দেশে বাংলাদেশের তরুণদের আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ করতে আগ্রহী জানিয়ে ইয়াও ওয়েন বলেন, আমরা যৌথভাবে কাজ করছি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সাথেও আমরা কাজ করছি৷ আমরা বাংলাদেশের উন্নয়নে আরও বেশি অংশীদার হতে আগ্রহী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউআইইউ’র সাবেক উপাচার্য এবং পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম রিজওয়ান খান। তিনি বলেন, এখনকার প্রচলিত জ্বালানি ব্যবস্থাপনার তুলনায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি বেশি সাশ্রয়ী। এটি আমাদের পরিবেশ রক্ষার জন্যও বেশি জরুরি। এ সময় তিনি জ্বালানি ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক এবং সময়োপযোগী করার ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউআইইউ’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া। হুয়াওয়ের সাথে ইউআইইউ’র কাজের প্রশংসা জানিয়ে তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ করতে আমরা বদ্ধ পরিকর এবং ইউআইইউ বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কোর্সের ওপর পাঠদান করা হচ্ছে। এটি সবুজ বিশ্ব গড়তে আমাদের প্রতিশ্রুতিকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, বিদ্যুৎ খাতের পরিবর্তনে সরকার নানা উদ্যোগ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা নীতিমালা প্রনয়ণ এবং সংস্কার চালিয়ে যাচ্ছি, এখানকার বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে চাই। সরকারের কেনাকাটা এখানে আমরা বিষয়গুলো পুনরায় মূল্যায়ন করবো।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, এখন সবাই স্মার্ট হতে চায়, কেউ পিছিয়ে থাকতে চায় না, সেজন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে আমাদের আরও বেশি কাজ করতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি বর্তমান সময়ের জ্বালানি ব্যবস্থায় ২০ শতাংশ ব্যয় কমাতে সহায়তা করছে এবং এটি স্থায়ী। সরকার এক্ষেত্রে সহায়তা করবে বলেও জানান তিনি।
হুয়াওয়ের অর্থায়নে ইউআইইউতে প্রতিষ্ঠিত এ ল্যাবের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো টেকসই সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা। এছাড়াও এখানে বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী হুয়াওয়ে এবং সিইআর, ইউআইইউ সম্মিলিতভাবে বিভিন্ন কোর্স ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে। এসব প্রশিক্ষণ ও কোর্সের বিষয়বস্তুতে নবায়নযোগ্য শক্তি টেকনোলোজি, গবেষণা, ডিজিটাল শক্তি এবং স্মার্ট এনার্জি সলিউশনের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এটি বাংলাদেশে প্রথম ল্যাব, যার অধীনে নবায়নযোগ্য শক্তি সংরক্ষনের সুযোগ থাকবে।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, গবেষক, অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা। পুরো আয়োজনটি ইউআইইউ’র সাথে সমন্বয় করেছে ইউআইইউ’র সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ সেন্টার (সিইআর)। এ সময় হুয়াওয়ে বাংলাদেশের শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।