নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠিত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২০ PM , আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২০ PM
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (এনএসইউ) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা ও প্রত্যাশা নিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিপ্লব পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং এই পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ নিয়ে আলোচনা করা হয়। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লাজা এরিয়ায় সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি এন্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিতর্ক অনুষ্ঠানে ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার মহামারীবিদ প্রমিত অনন্য চক্রবর্তী বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের অভাবের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অনেকেই চিন্তিত কারণ গত ২০ বছরে দেশে কোন বৈধ নির্বাচন হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান দীর্ঘায়িত হলে স্বৈরশাসনে ফিরে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই আমাদের এটি নিশ্চিত করতে হবে যে তারা যেন বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় না থাকে”।
এসআইপিজির পলিসি স্কলার সাকিফ আল এহসান খান সীমিত সময়ের মধ্যে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রয়োজনীয় সংস্কারের সক্ষমতার কথা উল্লেখ করে বলেন, “নির্বাচনে তাড়াহুড়োয় অতীতের ভুলগুলো পুনরাবৃত্তি এবং স্বৈরশাসক শক্তিগুলোকে ফিরে আসতে পারে”।
তিনি আরো বলেন, “একটি জাতির নাগরিক হিসেবে, আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে এবং এই অন্তর্বর্তী সরকারকে ২০২৪ সালের বিপ্লব যে সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে তা ব্যবহার করার সুযোগ দিতে হবে”।
“১৬ বছরের ফ্যাসিজমের পর, আমাদের জাতি পুনর্গঠনের একটি অনন্য সুযোগ পেয়েছে,” মোহাম্মদ নাজমুল অভি হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) তার বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় সীমাবদ্ধ হলে অর্থপূর্ণ সংস্কারের সুযোগ যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা উল্লেখ করে এই প্রশাসনের জন্য দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির লেকচারার মো. শাইয়ান সাদিক অন্তর্বর্তী প্রশাসনের স্বচ্ছ পরিকল্পনার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “আমরা যুবকদের প্রতি ঋণী, যারা এই আন্দোলনের জন্য তাদের জীবন দিয়েছে, তাই তাদের প্রচেষ্টা যেন ব্যর্থ না হয় এ ব্যাপারে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করতে তাদের প্রতি এ সরকারের সৎ হওয়া উচিত।”
অনুষ্ঠানে বিকাশ লিমিটেডের মনোয়ার আলিম তন্ময় এবং আইসিডিডিআরবি (icddr,b) এর প্রকল্প গবেষক ডা. আবরার হাসান দেশের বিভিন্ন খাতে ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা এবং বিপ্লবে আহত জনগণের জন্য চিকিৎসা সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি এ ব্যাপারে কঠোর সময়সীমা নির্ধারণের বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেন, “কঠোর সময়সীমা আরোপ করলে বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে অর্থপূর্ণ পরিবর্তনে বাধা আসতে পারে।”
আলোচনায় নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বক্তারা ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের প্রতি আরও স্বচ্ছতা এবং দায়িত্বশীলতার আহ্বান জানান। ডিবেটের শেষে, প্রমিত অনন্য চক্রবর্তী নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বক্তারা বলেন, “একটি বৈধ সরকারকে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে হবে যাতে স্থায়ী সংস্কার নিশ্চিত হয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক এবং এসআইপিজির সেন্টার ফর পীস স্টাডিসের (সিপিএস) শান্তি সমন্বয়ক ড. আব্দুল ওয়াহাব এই ডিবেটের মডারেটর ছিলেন। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র ও শিক্ষকরা নীতি বিতর্কে উপস্থিত ছিলেন। প্রশ্নোত্তর পর্বে তারা সরাসরি অংশগ্রহণ করে।