মানারাত ইউনিভার্সিটিতে ‘গণঅভ্যুত্থানের দিনগুলি: স্মৃতিচারণ ও সঙ্গীত পরিবেশন অনুষ্ঠিত'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ‘গণঅভ্যুত্থানের দিনগুলি: স্মৃতিচারণ ও সঙ্গীত পরিবেশন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুলিয়া ক্যাম্পাসের সেমিনার হলে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের আয়োজনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রধান রফিকুজ্জামান রুমানের স্বাগত বক্তৃতার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ ও তরুণ আইনজীবী ও জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক মানজুর আল মতিন এবং সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র শহিদ সাফওয়ানের বাবা ডাঃ মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান । এছাড়াও মনোজ্ঞ সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইসলামি গানের জনপ্রিয় শিল্পী ওবায়েদুল্লাহ তারেক ও হামিম জাবের মিয়াজি।
আরও পড়ুন: চুয়েট সংস্কারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ২১ দফা দাবি
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়কে অভূতপূর্ব বিপ্লব উল্লেখ করে বলেন, এ আন্দোলনের বিজয়ী বীরদের নিয়ে একটি সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতিপূর্ণ ঐক্যের সোনার বাংলাদেশ আমাদের গড়ে তুলতে হবে। যেখানে থাকবে না কোনো বিভাজন, হিংসা, বিদ্বেষ। মমতা ও ভালোবাসায় পুরো জাতি হবে ঐক্যবদ্ধ। সে ঐক্যকে দুর্বল করে জাতির মধ্যে আবার বিভাজন সৃষ্টি করতে দেশি-বিদেশি যে সব কুচক্রী ষড়যন্ত্র করছে তাদের ফাঁদে পা না দেয়ারও আহ্বান জানান এ সময় তিনি।
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দুই শহিদ শাকিল হোসেন ও শহিদ আহনাফ আবীর আশরাফুল্লাহ-সহ শহিদ আবু সায়ীদ, মুগ্ধ ও আন্দোলনের শহিদদের অসামান্য অবদানের কথা উল্লেখ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঝাপিয়ে পড়লে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন নিশ্চিত হয়। এর আগেও বার বার ছাত্ররা নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন আন্দোলনে জীবন দিয়ে বিজয়ী হয়েছিল। কিন্তু বিভাজনের কারণে পরবর্তীতে স্প্রিট নষ্ট হয়ে আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছিল। এবারও যাতে অনুরূপ পরিস্থিতি না হয় সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
এর আগে বিভিন্ন আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পিছনে নেতাদের বিক্রি হয়ে যাওয়া মূল কারণ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার যাতে সে রকম না হয় এজন্য পর্যায়ক্রমে সমন্বয়ক ও সহ সমন্বয়কের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল। যাতে একজন কোন ষড়যন্ত্রের শিকার হলে পরের জন আন্দোলন এগিয়ে নিতে কাজ করতে পারেন।
আরও পড়ুন: ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছাত্র–শিক্ষক রাজনীতি থাকা না–থাকা নিয়ে ভাবছে সরকার
ছাত্র-জনতার অর্জনকে নস্যাৎ করতে এবারও যারা হানাহানি, লুটপাট ও বিভাজন সৃষ্টি করছেন তাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করারও আহ্বান জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক ।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আলোচক মানজুর আল মতিন বলেন, আন্দোলনের সময় কে কোন ধর্মের, কে ডান, কে বাম, কে রিকশাওয়ালা, কে শ্রমিক, কে কৃষক, কে ছাত্র, কে চাকুরিজীবী, কে মধ্যবিত্ত, কে উচ্চবিত্ত খোঁজা হয়নি। কোন প্রশ্ন না করে আমরা এক হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম। আমাদের এই অর্জন ধরে রাখতে হলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধানবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।