চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে পড়ে এআইইউবির ছাত্রীর মৃত্যু
বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় ছিনিয়ে নেওয়া একটি চলন্ত বাসের জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে সানজিদা স্বর্ণা (২০) নামে এক ছাত্রী নিহত হয়েছে। আজ বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ধনকুন্ডি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সানজিদা স্বর্ণা বগুড়া সদর উপজেলার নিশিন্দারা উপ-শহর এলাকার বাসিন্দা ও বিআরটিসি মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুর রউফের মেয়ে। তিনি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এআইইউবি) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
বাস ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ রনি মোল্লা (২৭) নামে এক যুবককে বগুড়া শহরের লিচুতলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
জানা গেছে, শাহ্ ফতেহ্ আলী পরিবহনের একটি বাস বুধবার সকাল ৬টায় ঢাকা থেকে নওগাঁর উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ওই বাসে অন্যান্য যাত্রীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী স্বর্ণাও বগুড়ায় ফিরছিলেন। ওই বাসে যাত্রী বেশে রনিও ওঠেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাসটি শেরপুরে ‘ফুড ভিলেজ’ নামে একটি রেস্টুরেন্টে যাত্রা বিরতির জন্য থামে। তখন অন্য যাত্রীরা নামলেও স্বর্ণাসহ চার নারী যাত্রী এবং রনি বাসের ভেতরেই রয়ে যায়। কিছু সময় পর রনি হঠাৎ ড্রাইভিং সিটে বসে ‘ট্রায়াল’ দেওয়ার কথা বলে বাসের ইঞ্জিন চালু করে ৫ যাত্রীকে নিয়ে ফুড ভিলেজ থেকে বের হয়ে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। অচেনা চালকের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো দেখে অজানা আতঙ্কে যাত্রীরা চিৎকার করতে শুরু করে। একপর্যায়ে দুপুরে আতঙ্কিত স্বর্ণা জানালা খুলে লাফ দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন স্বর্ণাকে উদ্ধার করে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে রনি দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে বগুড়া শহরের লিচুতলা এলাকায় একটি পেট্রল পাম্পে এসে থামে। পরে তিনি বাস থেকে নেমে পাশেই তার বাড়িতে চলে যায়। বাস ছিনতাইয়ের খবর পেয়ে তৎপর শাজাহানপুর পুলিশ লিচুতলা এলাকায় সেই পেট্রল পাম্পে গিয়ে বাসটিকে যাত্রীবিহীন অবস্থায় দেখতে পায়। পরে ড্রাইভিং সিটের নিচে পড়ে থাকা একটি মানিব্যাগের ভেতরে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে ছিনতাইকারী রনির সন্ধান পায়। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রনি মোল্লা পেশায় একজন ট্রাকচালক জানা গেছে। তিনি যাত্রী বেশে আব্দুল্লাহপুর থেকে শাহ্ ফতেহ আলী পরিবহনের ওই বাসে উঠেছিলেন। পেট্রল পাম্পে রাখা ওই বাসের ভেতরে আমরা ৩ নারী যাত্রীকে পাই। তাদের কাছ থেকে পুরো ঘটনার বর্ণনা পাই।
শাহ্ ফতেহ্ আলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমিনুল ইসলাম জানান, রনি একজন পেশাদার ছিনতাইকারী ও মাদকসেবী। যে বাসটি ছিনতাই করা হয়েছিল তার চালককে রনি মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা করতে বলা হয়েছে।