কোটা সংস্কার আন্দোলনে নামলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
কোটা সংস্কারপন্থী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে এবার নতুন বাজার সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেছেন বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৫ জুলাই) সকালে শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড হাতে বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে এসে সড়কে অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীদের অবস্থানের ফলে নতুন বাজার সংলগ্ন ওই সড়কের দুই পাশে যানচলাল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে নতুন বাজার ও আশেপাশের এলাকার সড়কে সমবেত হন অন্তত ১০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা ১২টার দিকে তারা একত্রিত হয়ে নতুন বাজার সড়কে বসে পড়েন।
একই সময়ে আশেপাশে থাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও গ্রিন ইউনিভার্সিটি থেকে শিক্ষার্থীরা যোগ দিলে অবরোধে যোগ হয় ভিন্ন মাত্রা।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, সরকারি চাকরিতে কোটা থাকার ফলে মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমরা এ প্রথার বাতিল চাই। সরকারি চাকরিতে কোটা থাকলে সর্বোচ্চ ৭.৫ শতাংশ হতে পারে, এর বেশি না।
আন্দোলনে অংশ নেয়া গ্রিন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জানে আলম অপু বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের জন্য আমরা বাধ্য হয়ে আজ রাজপথে এসেছি। আমরা মেধার মূল্যায়ন চাই। মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন করতে চাই। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে, সার্বিক উন্নতি চাইলে মেধার মূল্যায়নের বিকল্প নেই। তাই আমাদের নিজেদের এবং দেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতেই আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছি।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার চেয়ে রাস্তায় ইউআইইউর শিক্ষার্থীরা
এদিকে, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মিছিল সমাবেশে গতকাল মধ্যরাতে উত্তাল হয়ে উঠেছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। কয়েকটি ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিলকারীরা আবাসিক হলগুলো থেকে বেরিয়ে এসে ‘তুমি কে আমি কে - রাজাকার, রাজাকার’, ‘কে বলেছে কে বলেছে- সরকার সরকার’ ‘চাইতে গেলাম অধিকার- হয়ে গেলাম রাজাকার’ এবং ‘কোটা নয় মেধা- মেধা মেধা’- এ ধরনের স্লোগান দিয়ে মিছিল করতে থাকে।
এ মাসের শুরু থেকে টানা আন্দোলন ও বাংলা ব্লকেড নাম দিয়ে অবরোধের মতো কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এ কর্মসূচির কারণে গত সপ্তাহে কয়েকদিন শহরে তীব্র যানজট তৈরি হয় এবং মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে রবিবারই দিনের বেলায় আন্দোলনকারীরা বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। এতে সংসদের অধিবেশন ডেকে কোটা সংস্কারের দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে সরকারকে চব্বিশ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।