প্রতিষ্ঠার তিন দশকে অনন্য উচ্চতায় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি
১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বরে মাত্র ২০ জন শিক্ষার্থী ও ৬ জন শিক্ষক নিয়ে মহাখালীর ভাড়া করা একটি ভবনে যাত্রা শুরু দেশের বেসরকারি খাতের অন্যতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে দশ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী, ৩০০ জন পূর্ণকালীন ও ১৫০ জন খণ্ডকালীন শিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষকদের মধ্যে ১২৫ জনেরও অধিক রয়েছেন পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক।
প্রতিষ্ঠার প্রায় তিন দশক পেরিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি পৌঁছেছে অনন্য উচ্চতায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সব শর্ত পূরণ করে ২০১৬ সালে স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য স্থায়ী সনদ লাভ করে। বর্তমানে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং এপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। এছাড়াও স্বনামধন্য বোর্ড সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে তাঁরা প্রাচ্যের মূল্যবোধ ও নৈতিকতার সঙ্গে পাশ্চাত্যের উদ্ভাবনার মিশেলে ইস্ট ওয়েস্টকে এক ব্যতিক্রমী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপায়ণ করেছেন।
ইস্ট ওয়েস্টকে একসময় মধ্যবিত্তদের বিশ্ববিদ্যালয় বলা হতো। বিষয়টিকে এক পর্যায়ে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয় বলে জানান প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি জানান, টিউশন ফি’র ক্ষেত্রে এখনও আমরা একইসাথে ব্যালেন্স এবং শিক্ষার্থীদের অধিক পরিমাণে শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছি। ফলে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই মধ্যবিত্তদের আস্থার কেন্দ্রে রয়েছে।
“ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সকল স্তরে যেকোনো বিশৃঙ্খলা এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। ফলে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীরা তুলনামূলক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। বর্তমানে আমাদের লক্ষ্য হলো আগামী ৫ বছরের মধ্যে এশিয়ার সেরা ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করা-অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টির টিউশন ফি থেকে অর্জিত আয়ের বৃহৎ একটি অংশ নানা ধরনের বৃত্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়। যে কারণে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসে। বলতে গেলে দেশের মধ্যবিত্ত পরিবার আর নারী শিক্ষার্থীদের প্রধান আস্থার জায়গা হয়ে উঠেছে ইস্ট ওয়েস্ট।
বৈশ্বিক মানের শিক্ষা প্রদান এবং যোগ্য মানবসম্পদ তৈরিতে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে প্রায় ২৫টি ক্লাব রয়েছে। এছাড়াও নানা ধরনের মানসিক চাপ মোকাবিলার জন্য পেশাদার মনোবিজ্ঞানীদের নিয়ে গঠিত মানসিক সেবাকেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের সেবা দেয়া হয় । একই সঙ্গে শিক্ষার মানসম্মত পরিবেশ নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, গবেষণা কেন্দ্র, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেন্টার, কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল, মেডিকেল সেন্টার, অডিটোরিয়াম, ক্যান্টিন রয়েছে।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন
উচ্চশিক্ষায় তিন দশকের পথচলা এবং আগামীর স্বপ্ন নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, সম্প্রতি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের চেয়ার অধ্যাপক ফারহানা ফেরদৌস যুক্তরাষ্ট্রের এসিবিএসপি কর্তৃক এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এক্সিলেন্স ইন টিচিং অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। সম্ভবত বাংলাদেশে এটিই প্রথম। পাশাপাশি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই এবং ত্রিপলি প্রোগ্রামগুলো বর্তমানে বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত।
শহীদ স্মৃতিসৌধ, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি
শিক্ষার মানসম্মত পরিবেশের কথা উল্লেখ করে ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সকল স্তরে যেকোনো বিশৃঙ্খলা এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। ফলে ফলে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীরা তুলনামূলক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। বর্তমানে আমাদের লক্ষ্য হলো আগামী ৫ বছরের মধ্যে এশিয়ার সেরা ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করা।
তিনি আরও বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ শিক্ষককে পিএইচডি প্রোগ্রামের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করছি।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি চালু হলে আমাদের লক্ষ্য থাকবে মানসম্পন্ন পিএইচডি প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান প্রথম সারিতে নিশ্চিত করা। আমরা সবসময়েই চেষ্টা করি শিক্ষার্থীরা যেন ইস্ট ওয়েস্ট স্বল্প খরচে বিশ্বমানের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।