গ্রিন ইউনিভার্সিটির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিনের যোগদান
গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের নতুন উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) আড়ম্বরপূর্ণ এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাঁকে বরণ করে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ফায়জুর রহমান, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির, রেজিস্ট্রার রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন (বিএন) শেখ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন (এলপিআর) ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ডিন, চেয়ারপারসনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আচার্য মোঃ সাহাবুদ্দিন আগামী ৪ বছরের জন্য ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিনকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দেন।
উপাচার্য হিসেবে যোগদানের পর ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষা ও গবেষণায় গ্রিন ইউনিভার্সিটিকে উত্তরোত্তর এগিয়ে নেওয়াই আমার উদ্দেশ্য। পাশাপাশি বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান করে নেওয়া, বিশ্বের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে গবেষণা চুক্তির বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ১৯৯৯ সালে জাপানের শিগা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রযুক্তি শিক্ষায় মাস্টার্স এবং ২০০২ সালে কিয়োটো ইনস্টিটিউট থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এছাড়া ২০১৩ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি নেন ড. শরীফ উদ্দিন।
১৯৯১ সালে চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (বর্তমান চুয়েট) প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন অধ্যাপক শরীফ। ১৯৯২ সালে যোগ দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিএসই বিভাগে। শিক্ষকতা জীবনে তিনি কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের ইনচার্জসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি একাডেমিক বিভিন্ন বিষয়ে দেশ-বিদেশে নানা ধরনের গবেষণামূলক কাজে যুক্ত ছিলেন বরেণ্য এই অধ্যাপক। এলসেভিয়ার, স্প্রিঞ্জার ও আইইইইসহ বিশ্বখ্যাত জার্নালে দুই শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ রয়েছে তাঁর। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অসংখ্য কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।
২০০৪ সালে অন্ধদের জন্য তৈরি ‘ইলেকট্রনিক আই’ তাঁকে সিএনএন, বিবিসি, রয়টার্স নিউ ইয়র্ক টাইমস ও জাপান টাইমসসহ বিশ্বখ্যাত মিডিয়া থেকে স্বীকৃতি এনে দেয়। বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনর ফলস্বরূপ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দুটি পেটেন্ট রয়েছে শিক্ষায়-গবেষণায় অনন্য এই অধ্যাপকের। ইতিমধ্যে তার অধীনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী পিএইচডি ও মাস্টার্স ডিগ্রির রিচার্স থিসিস সম্পন্ন করেছেন।
এসবের বাইরেও সিঙ্গাপুরের বায়োইনফরমেটিক্স ইনস্টিটিউট, জাপানের টয়োটা টেকনোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট, কিয়োটো ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, চিবা ইউনিভার্সিটি এবং জার্মানির বন ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন দেশের খ্যাতিমান বিশ্ববিদ্যালয়ে বিস্তৃত পরিসরে গবেষণার অভিজ্ঞতা রয়েছে ড. মোহাম্মদ শরীফের। গুণী এই শিক্ষকের গবেষণার বিষয়বস্তু-কম্পিউটার ভিশন, ইমেজ সিকিউরিটি, ডেটা সায়েন্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং মেশিন লার্নিং। শিক্ষা ও গবেষণায় নানামুখী অর্জনের পাশাপাশি দেশের কম্পিউটার এবং তথ্য সিস্টেমের ক্ষেত্রে পেশাদার সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন।