বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রির অনুমতি দেওয়ার সময় এসেছে: শিক্ষামন্ত্রী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:২১ PM , আপডেট: ১৩ জুন ২০২৪, ০২:৩৮ PM
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রির অনুমোদনে দেওয়ার সময় এসেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আফতাবনগর খেলার মাঠে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩তম সমাবর্তনে বক্তব্যকালে তিনি এ কথা জানান।
সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি প্রদান করেন। এ সমাবর্তনে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ২ হাজার ৮৬১ জন শিক্ষার্থীকে সনদ দেয়া হয়। এছাড়া অনন্য মেধাবী চারজন শিক্ষার্থীকে দেয়া হয় স্বর্ণ পদক।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদানের কথা উল্লেখ করে এমফিল এবং পিএইচডি গবেষণার সুযোগ দেবার দাবি জানান।
পরবর্তীতে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, সরকার পাবলিক বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য করে না। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির মতো দেশের কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখন এমন মানে উত্তীর্ণ হয়েছে যে তাঁদের আরও উচ্চতর গবেষণা অর্থাৎ এমফিল/পিএইচডি ডিগ্রির অনুমতি দেবার সময় এসেছে। একইসাথে দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মূল্যবোধ, দক্ষতা এবং জ্ঞানের সমন্বয়ে এমন গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে হবে যেন তাঁরা সারা পৃথিবীর যে কোন জায়গায় কাজ করার সামর্থ্য রাখে। পাশাপাশি সরকার আরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা জার্মানির কুহনে লজিস্টিকস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অ্যালান ম্যাককিনন বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে তেমন ভূমিকা না থাকলেও অনেক বেশী ক্ষতির স্বীকার হচ্ছে বাংলাদেশ। তাই সমস্যা ও সংকট মোকাবেলার জন্যেই সাপ্লাই চেইন বিষয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা রাখে এমন যোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরির ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদ্ভাবন ও প্রয়োগ, রোবোটিক্সের ব্যবহার, ব্লক চেইন, মেশিন লার্নিং পৃথিবীকে নিয়ে যাচ্ছে পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের যুগে। অচিরেই আমরা এসব বিষয়ে পাঠ্যক্রম চালু করবো। আর এভাবেই ২০৩০ সালের মধ্যে এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম শীর্ষ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিকে গড়ে তোলার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বলেন, আজকের বিশ্বে কাজ করতে সমস্যা সমাধান, সমালোচনামূলক চিন্তা, উদ্ভাবনী ক্ষমতার মতো দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তাই, পরিবর্তিত প্রয়োজনীয়তার সাথে চলতে নিজেকে আপডেট রাখা, পাশাপাশি দেশ ও সমাজের বৃহত্তর স্বার্থের দিকেও নজর দিতে গ্রাজুয়েটদের প্রতি পরামর্শ দেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শামস রহমান বলেন, আমরা শিক্ষা ও গবেষণার মধ্যে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করছি। আমরা ইন্ড্রাস্টি যে ধরনের গ্র্যাজুয়েট চায় সে ধরনের শিক্ষাক্রম চালু করেছি। পাশাপাশি, গবেষণার মাধ্যমে পাওয়া নতুন জ্ঞানও শিক্ষা ক্রমে যুক্ত করছি।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যগণ, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারপার্সন, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, গ্র্যাজুয়েট ও তাঁদের অভিভাবকরা অংশ নেন। শিক্ষা জীবনের শেষে যথাসময়ে সনদ হাতে পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।