গুরুত্বপূর্ণ তিন প্রশ্নের জবাব দিলেন ব্র্যাকের সাবেক শিক্ষক আসিফ
নতুন কারিকুলামে সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে থাকা ট্রান্সজেন্ডারে অধ্যায় নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় এসেছেন বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। তার বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে বিতর্ক ও আলোচনা।
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে তাকে ট্রান্সজেন্ডার এবং সমকামিতা বিরোধী বক্তব্য দিতে দেখা যায়। সেসময় তাকে সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের এক অধ্যায়ে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক একটি গল্পের পাতা ছিঁড়ে ফেলতেও দেখা গেছে। বিতর্কের সূত্রপাত এর পরই।
এরইমধ্যে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় দর্শন বিভাগের খণ্ডকালীন প্রভাষক ওই শিক্ষকের সাথে চুক্তি বাতিল করেছে। এসব ঘটনার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থেমে নেই শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই তার পক্ষ নিয়েছেন, আবার অনেকেই তার বিরোধিতাও করেছেন। আসিফের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।
গুরুত্বপূর্ণ এমন তিনটি প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ শিক্ষক। এক ভিডিও বার্তায় তিনি তার বিরুদ্ধে ওঠা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তির সত্যতা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে সুযোগ-সুবিধা নেওয়া ও নিজের বিরুদ্ধে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আছে কিনা সে বিষয়েও ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
ভিডিও বার্তায় শিক্ষক আসিফ বলেন, অনেকে জানতে চেয়েছেন আমার সাথে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কোন চুক্তি ছিল কিনা বা ক্লাস নিয়েছি কিনা। এ প্রশ্নের উত্তরে আমি বলছি, আমার সাথে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির গত সেমিস্টারের মতো এ সেমিস্টারেও চুক্তি ছিল। তাদের সাথে আমার মৌখিক চুক্তি হয়েছে। তারা আমাকে সেকশন দিয়েছে; ক্লাসের রুটিন দিয়েছে। আমি ক্লাসও নিয়েছি। যেগুলোর ইমেইলে ডকুমেন্টস আমার কাছে আছে।
দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনো প্রোগ্রামে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করিনি। এখন অন্য কোনো ব্যক্তি যদি কোনোভাবে জানে আমি ব্র্যাকে ক্লাস নেই, আমি এখানকার শিক্ষক। সেক্ষেত্রে তিনি যদি কোনো জায়গায় তা বলেন, সেক্ষেত্রে তো আমার কিছু করার নেই।
চাকরিচ্যুতির বিষয়ে ব্যক্তি আসিফের বিরুদ্ধে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অভিযোগ আছে কিনা এমন প্রশ্নের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি অফিসিয়ালি আমাকে কিছু বলেনি যে, আমার বিরুদ্ধে তাদের কোনো অভিযোগ রয়েছে। উল্টো ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি নামে যে অভিযোগটি রয়েছে, তারা টাকার বিনিময়ে তাদের ওয়েবসাইটে এলজিবিটি প্রমোট করেছে।
তিনি বলেন, এটাও সত্য যে অভিযোগ থাকলেই যে সেটি সত্য হবে—এমন কোন কথা নেই। এখন ব্র্যাকের বিরুদ্ধে যে দেশের জনগণ এমন অভিযোগ তুলেছেন সেক্ষেত্রে জনগণের উচিত সেই তথ্যগুলোর সত্যতা বের করা। আর ব্র্যাকের উচিত সেগুলোর সঠিক উত্তর দেওয়া। এই প্রসেসটা এভাবেই হয় মূলত। কিন্তু আমার সাথে কি তা করা হয়েছে? হয়নি।
এর আগে গত শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক : বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক গল্প পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদ জানান শিক্ষক আসিফ মাহতাব।
তিনি বলেন, সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করা হচ্ছে। এ সময় তিনি সবার সামনে ওই পাঠ্যবই থেকে ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্পের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন। এরপর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় তার বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুতির পদক্ষেপ নেয়।