নতুন শিক্ষার্থী ভর্তিতে ফের নিষেধাজ্ঞার মুখে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি!
নতুন শিক্ষার্থী ভর্তিতে ফের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে যাচ্ছে বেসরকারি প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী এ নিষেধাজ্ঞায় পড়তে যাচ্ছে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে দেশের উচ্চশিক্ষার তদারক সংস্থা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে বেশ কয়েকবার সময় দেয় ইউনিভার্সিটিকে। কয়েক মেয়াদে বাড়ানো ইউজিসির এ সময়সীমা শেষ হয়েছে গত ৩১ ডিসেম্বর। তবে বরাবরের মতো আবারও বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে সময় চেয়ে আবেদন করেছে কমিশনে।
এর আগে বিগত ২০২৩ সালের শুরুতেও এমন নিষেধাজ্ঞার মুখে ছিল প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি। এরপর তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সময়সীমা সদ্য বিদায়ী বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করে ইউজিসি। এর মধ্যেও প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার অগ্রগতি হয় অতি সামান্যই। ফলে প্রাইম এশিয়ার নতুন আবেদনে ইউজিসি সাড়া না দিলে আবারও শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে উচ্চশিক্ষালয়টির স্প্রিং-২০২৪ সেমিস্টারের ভর্তিকৃত বিদ্যার্থীদের শিক্ষাজীবন।
স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি নতুন করে সময় চেয়ে কমিশনে আবেদন করেছে। আমরা তাদের আবেদন এবং ক্যাম্পাস উন্নয়নের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো—অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, সদস্য, ইউজিসি।
বিশ্ববিদ্যালয়টি বর্তমানে বনানী এলাকার সি ব্লকের ১১নং বাড়িতে তাদের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান চলমান রেখেছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীর প্রগতি সরণি থেকে দেবগ্রাম যাওয়ার পথে পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের পাশেই প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানে একটি সাইনবোর্ড ঝোলানো রয়েছে। সেখানে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ চলমান থাকলেও এখনও শেষ হয়নি। কবে নাগাদ শেষ হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।
যদিও প্রাইম এশিয়া কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা আগামী দু-তিন মাস পর থেকেই শিক্ষার্থীদের স্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান শুরু করতে পারবে। প্রাথমিকভাবে নির্মাণাধীন স্থায়ী ক্যাম্পাস পাঠদান উপযোগী হলে স্থানান্তর করা হবে একটি বিভাগ। এরপর পর্যায়ক্রমে স্থানান্তর করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়টির অন্য বিভাগগুলো।
আরও পড়ুন: শিক্ষক, ল্যাব ও রাসায়নিক সংকট নিয়ে চলছে ফার্মেসি শিক্ষা
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির পক্ষ থেকে দেশের উচ্চশিক্ষার তদারক সংস্থা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু করতে এক বছর অর্থাৎ আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে। আবেদনটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ইউজিসিতে। কমিশনের পর্যালোচনার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে ইউজিসির পক্ষ থেকে।
ইউজিসির তথ্য বলছে, দেশের বেসরকারি উচ্চশিক্ষালয়গুলোর মধ্যে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আইনানুযায়ী নিজস্ব ক্যাম্পাসে যেতে না পারায় নিষেধাজ্ঞায় পড়ে ভিক্টোরিয়া, আশা এবং প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটিসহ মোট চারটি প্রতিষ্ঠান। এরপর ২০২৩-এ ইউজিসিতে আবেদনের প্রেক্ষিতে শর্ত সাপেক্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পায় এসব বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়াও তখন স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে সময় পায় আরও ১২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
রাজধানীর প্রগতি সরণি থেকে দেবগ্রাম যাওয়ার পথে পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের পাশেই প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানে একটি সাইনবোর্ড ঝোলানো রয়েছে। সেখানে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ চলমান থাকলেও এখনও শেষ হয়নি।
এ বিষয়ে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. ইফফাত জাহান বলেন, আমরা স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে এক বছরের সময় চেয়েছি। এখন এ বিষয়ে তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।
আর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় ছিল। এরপর তারা নতুন করে সময় চেয়ে কমিশনে আবেদন করেছে। আমরা তাদের আবেদন এবং ক্যাম্পাস উন্নয়নের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।