বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ট্রাস্টি মন্ত্রিসভায়, সংসদে
এবার দেশে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী মিলে ৬ জন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি জায়গা পেয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের নবগঠিত মন্ত্রিসভায়। এছাড়া গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছেন বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৫ জন ট্রাস্টি। সবমিলে বর্তমানে মন্ত্রিসভা ও জাতীয় সংসদের ২১ জন সদস্য বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক পর্ষদে রয়েছেন। এদের কেউ কেউ আবার একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজেও (বিওটি) রয়েছেন।
অ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিজ অব বাংলাদেশ (এপিইউবি) ও বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট বিশ্লেষণে এসব তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টিদের একজন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির বিওটি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিওটির চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র,আ,ম, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিওটি চেয়ারম্যান পদে। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক দায়িত্ব পালন করছেন বরিশালের গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিওটি সেক্রেটারি পদে।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত দায়িত্ব পালন করছেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিওটি সদস্য হিসেবে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম (টিটু) রয়েছেন সিটি ইউনিভার্সিটির বিওটি চেয়ারম্যান পদে।
সংসদ সদস্যদেরে মধ্যে রয়েছেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির বিওটি সদস্য নাসির শাহরিয়ার জায়েদি, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের বিওটি সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটি সদস্য মো. ইকবাল হোসেন, জামালপুরের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মির্জা আজম।
এছাড়াও এ তালিকায় রয়েছেন আনোয়ার খান মডার্ন ইউনিভার্সিটির বিওটি চেয়ারম্যান ও প্রাইম ইউনিভার্সিটির বিওটি সদস্য আনোয়ার হোসেন খান, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির বিওটি সদস্য টিপু মুনশি ও আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির বিওটি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বাবু ও সদস্য রাশেদ খান মেনন।
ফেনী ইউনিভার্সিটির বিওটি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী (নাসিম) ও সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, চট্টগ্রামের পোর্টসিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিওটি চেয়ারম্যান একেএম এনামুল হক শামীম ও এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ, বান্দরবান ইউনিভার্সিটির বিওটি চেয়ারম্যান বীর বাহাদুর উশৈসিং এবং চুয়াডাঙ্গার ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিওটি চেয়ারম্যান সোলায়মান হক জোয়ার্দারও সংসদ সদস্য হয়েছেন এবারের নির্বাচনে।
দেশের বেসরকারি উচ্চশিক্ষা পরিবার সংশ্লিষ্টদের সংসদে অংশগ্রহণ উচ্চশিক্ষায় বেসরকারি খাতের স্বপ্নপূরণে সহায়ক হবে বলে মনে করেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আশিক মোসাদ্দিক। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্ট্রিরা শিক্ষানুরাগী বলেই তারা এ পরিবারের সাথে সম্পৃক্ত। তারা যে স্বপ্ন নিয়ে শিক্ষা পরিবারে যুক্ত হয়েছেন—সে স্বপ্নের কথা, তাদের ভিতরের আকাঙ্ক্ষার কথা সংসদে তুলে ধরতে পারলে শিক্ষার একটি গুণগত পরিবর্তন আসবে। বিশ্বজুড়ে চলমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টিতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষাবান্ধব সরকার হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়ও তিনি পৃষ্ঠপোষকতা করবেন। এখাতে যত ধরনের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা দূরীকরণে আমাদের নবগঠিত সরকার এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যক্তিরা কাজ করবেন। শুধু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে আমাদের উচ্চশিক্ষার চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়—বেসরকারি খাতেরও আরও উন্নতি করতে হবে।
জানতে চাইলে এপিইউবি সভাপতি শেখ কবির হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তারা যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে সংসদে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য হয়েছে। তারা দেশের স্বার্থ দেখবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ দেখবে। এটাকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছি।