১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:২৫

‘বেকারত্ব কমাতে ভূমিকা পালন করেছে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি’

বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান  © টিডিসি ফটো

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এমিরিটাস প্রফেসর’ অধ্যাপক ড. ওয়াহিদ উদ্দীন মাহমুদ বলেছেন, সত্যিকারের উদ্যোক্তাদের কারণে অর্থনৈতিক বৈষম্য তৈরি হয় না, তৈরি হয় অতি মুনাফা লোভী ও অনৈতিক সুবিধা ভোগীদের মাধ্যমে যারা নীতিনির্ধারক মহলের আনুকূল্যে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে। অতি পুঁজি বাদের ফলে দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য তৈরি হয়েছে। 

রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান সম্পাদিত ‘সংগ্রামী উদ্যোক্তাদের সাহসী পথচলা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল, আইবিসিসিআিই এর প্রেসিডেন্ট এবং নিটোল নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহমেদ, এলিট গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক শাইয়ান সিরাজ, এক্সক্লুসিভ ক্যান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ নাসির, বারডেমের ‘প্রফেসর এমিরিটাস’ অধ্যাপক ড. হাজেরা মাহতাব, আরপি সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মনীন্দ্র কুমার রায় প্রমুখ । 

ডিআইইউ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড ইনোভেশন সেন্টারের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বইটির উপর আলোকপাত করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। অনুষ্ঠানে বইটির সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভির্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকাশনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রি ইনোভেশন সেন্টারের পরিচালক আবু তাহের খান। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচ আর ডি আই এর সহকারী পরিচালক সামিহা খান।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. ওয়াহিদ উদ্দীন মাহমুদ বলেন, দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ৩৫%। তবে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটু ব্যতিক্রমী বলেই মনে হয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে বেকারত্ব কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। হাজারো প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ উদ্যোক্তাদের সামষ্টিক প্রয়াসেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের এ পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের রাজনৈতিক স্খলনের পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্যেও স্খলন হয়েছে। তিনি ব্যবসায়ীদের মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি সমাজের কল্যাণে কাজ করার মাধ্যমে ‘সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট’ এ যুক্ত হওয়ার আহবান জানান। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জীবন চলার পথে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের একটি হচ্ছে পেশা নির্বাচন এবং সেক্ষেত্রে তিনি অর্থের প্রাচুর্য কম থাকলেও নিজের ভালোলাগা ও পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে পেশা নির্বাচন করার আহ্বান জানান। আর জীবনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো বিয়ে, যার মধ্য দিয়ে সঙ্গীকে নিয়ে সারাজীবন একসাথে কাটাতে হবে। ফলে এখানেও যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন রয়েছে।

অনুষ্ঠানে ড. মো. সবুর খান বলেন, প্রচুর পরিমাণ উদ্যোক্তা তৈরি করা ছাড়া একটি দেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। কারণ উদ্যোক্তারা নিজের জীবনের পরিবর্তনের পাশাপাশি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের পরিবর্তন সাধন করেন এবং বিপুল পরিমাণ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। এভাবে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। তাই তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ‘সংগ্রামী উদ্যোক্তাদের সাহসী পথচলাা’ নামের এই গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন বলে জানান ড. মো. সবুর খান। 

এসময় তিনি আরও বলেন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়ার সেতুবন্ধন তৈরিতে এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং সে লক্ষ্যেই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম হয়েছে এবং টেকসই উন্নয়নে সকল পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। আগামীতে পেটেন্টে বাংলাদেশে সেরা হওয়ার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি কাজ করে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ড. মো. সবুর খান ২০১৪ সালে ‘উদ্যোক্তা উন্নয়ন নির্দশিকা’ শীর্ষক প্রথম বই লেখেন। এরপর দ্বিতীয় বই লেখেন ২০১৬ সালে ‘এ জার্নি টুওয়ার্ডস এন্ট্রাপ্রেনারশিপ’ নামে। এর এক বছর পর তিনি তৃতীয় বই লিখলেন ‘উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও ব্যবসায় নির্দেশনা’ শিরোনামে। এ বছর জানুয়ারিতে লেখেন “পথিকৃৎ উদ্যোক্তাদের সংগ্রামী জীবন” আর রবিবার প্রকাশিত হলো ‘সংগ্রামী উদ্যোক্তাদের সাহসী পথচলা’ বইটি।