টং দোকানে চায়ের আড্ডা আর গানে মাতেন ইস্ট ওয়েস্ট শিক্ষার্থীরা
টংয়ের দোকানে টুংটাং চায়ের কাপের শব্দ। সাথে ধোয়া উঠা পিঠা, আড্ডা আর গান-বাজনার এমনই বৈচিত্রপূর্ণ দৃশ্যের দেখা মিলবে রাজধানীর আফতাবনগরে অবস্থিত ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি সংশ্লিষ্ট এলাকায়। ক্যাম্পাসের ঠিক পেছনে এর অবস্থান। বিশ্ববিদ্যালয়টির এমন শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, যিনি এখনো এখানের খাবার খাননি। এখানের চায়ের আড্ডায় বসেননি।
শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাসের ফাঁকে অথবা ক্লাস শেষে এখানে একবার হলেও আড্ডা দিতে আসেন সবাই। গ্রাম্য পরিবেশে চারপাশে কোলাহলমুক্ত হওয়ায় এই টংয়ের দোকানগুলোতে শিক্ষার্থীরা তাদের অবসাদ ও ক্লান্তি দূর করতে আসেন। সবুজে গাছপালা থাকায় এর পরিবেশ সবাইকে মুগ্ধ করে।
পড়াশোনা, পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন আর ক্লাসের চাপ এড়িয়ে আড্ডা যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে প্রতিটি শিক্ষার্থীর প্রাণে। যেখানে শিক্ষা কার্যক্রমের সকল ব্যস্ততা মিলিয়ে যায় কোন এক জাদুমন্ত্রে। ক্যাম্পাস জীবনের মতো রঙিন আর সুন্দর সময় নাকি একজন শিক্ষার্থীর জীবনে আসে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস জীবন শেষ করে প্রত্যেক শিক্ষার্থী কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। তখন যান্ত্রিক কর্ম ব্যস্ততায় ক্যাম্পাসে আড্ডা, বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া, টং দোকানের চা, বন্ধুদের সাথে গানের আড্ডায় মেতে উঠা এসব কিছু এক অলীক কল্পনায় ভাসে।
বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো এসব স্মৃতিই যেন জড়ো করছেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। তারাও ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী টং দোকানে চায়ের চুমুকে মেতে উঠেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনুভা তিশা বলেন, এখানে এসে আমরা বন্ধুরা ক্লাসের ফাঁকে আড্ডা দেই। টং চায়ের একটা অন্যরকম স্বাদ পাওয়া যায়। সেই স্বাদ নিতেই ছুটে আসি এই দোকান গুলোতে। আর জায়গাটা গ্রাম্য পরিবেশের হওয়ায় আমাদের এখানে আসতে ভালোই লাগে।
চড়া মূল্যের বাজার হলেও এখানে খাবারে দাম শিক্ষার্থীদের হাতের নাগালে হওয়ায় তাদের কাছে এই জায়গাটি আরো জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ বিভাগের শিক্ষার্থী মাইশা তাসনিম পুস্পিতা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ইউনিভার্সিটির পেছনের টং দোকানগুলোতে সাশ্রয়ী মূল্যের খাবার পাওয়া যায়। এখান পুরি, সমুসা, চা, বিস্কুট এবং আরও অনেক ধরনের খাবার পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে নাকি চায়ের দোকানে বসেলেও শেখা যায়। ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা শুধু যে আড্ডাতেই শেষ করে দেন তা নয়। আড্ডার মাঝেও চলে দেশের চলমান এবং বিশ্বে আলোচিত-সমালোচিত ঘটনাটি নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা। একেকজন হয়ে উঠেন বড় মাপের টক-শো ব্যক্তিত্ব। চায়ের চুমুকের সাথে চলে তাদের টক-শো।
এমনি জানা অজানা অনেক বিষয়ে আলোচনা করেন শিক্ষার্থীরা। এক চায়ের দোকানদার বলেন, জ্ঞানীদের মাঝে থাকলেও কিছু শেখা যায়। মামারা যখন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন, তখন শুনতে ভালোই লাগে। তাদের কথায় দেশের অনেক কিছু জানতে পারি।