শিক্ষার্থীকে হত্যার বিষয়ে যা বললেন ড্যাফোডিল ভিসি
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান অন্তরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। ঘটনার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার বিকালে ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে
এ বিষয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে কথা বলেছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমান
একজন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে নিয়ে মারধর করা , তাকে মেরে ফেলা এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো দায় আছে কিনা জানতে চাইলে প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমান বলেন, দায় তো আছে। আমাদের ছাত্র মারা গেলো আমরা সারাদিন এ বিষয়ে কাজ করেছি। এর আগে প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনা ফলো করছে। বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছে শিক্ষার্থীকে হসপিটালাইজড করেছে। খোজঁ খবর নিচ্ছে। এটা একটা অনাকাঙ্খিত মৃত্যু।
এখন পর্যন্ত কি কি উদ্যোগ নিয়েছেন বিচারের জন্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সারাদিন এটা নিয়ে কাজ করছি। কালকে সকালে আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসবো সকাল ৮ টায়। এছাড়াও আজকে জুমার নামাজের পর দোয়া করেছি, বিকেলে শোকসভা করেছি।
এটার সাথে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জড়িত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ইনভেস্টিগেশন করছি। তারপর ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দিবো।
শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রক্টর কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলছেন। বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
এ ক্যাম্পাসে আরো মারধরের ঘটনা ঘটেছে তখন কি ব্যবস্থা নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিটি ঘটনাকে আমরা সিরিয়াসলি নিয়ে থাকি। ঘটনাগুলো এড্রেস করেছি। প্রতিবেশি যারা আছে তাদের সাথে কথা বলা, ভালো রিলেশন তৈরী করা। এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী রাহাতের সাথে অন্তরের দ্বন্দ্ব ছিল। সম্প্রতি সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় এই দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। পরে রাহাত স্থানীয়দের যোগসাজসে গত ৩০ অক্টোবর বিরুলিয়ার দত্তপাড়া থেকে অন্তরকে তুলে নিয়ে যায়। তবে অন্তরকে তুলে নেওয়ার সময় রাহাত ঘটনাস্থলে ছিলেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পরে স্থানীয়রা অন্তরকে বিরুলিয়া ব্রিজের নিচে নিয়ে গিয়ে বেদম মারধর করেন। মারধরের এক পর্যায় জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে খাগান বাজারের কাছাকাছি ফেলে রাখা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখান প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে তার পরিবারের জিম্মায় ময়মনসিংহে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন অন্তর। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল তার মৃত্যু হয়।
নিহত অন্তর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শেষ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে।
এদিকে শুক্রবার অন্তরের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরবর্তীতে আকরান বাজারে স্থানীয়দের শতাধিক দোকানপাট ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।