নতুন শিক্ষাক্রমকে আমি সমর্থন করি: ড. কাজী খলিকুজ্জামান
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ এবং ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ বলেছেন, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। এখন সময় এটার বাস্তবায়ন সঠিকভাবে করার। আমি এই শিক্ষাক্রমকে সমর্থন করি।
আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (ইইউবি) প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি ও ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের আচার্য মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ বলেন, আমাদের সব শিক্ষার্থী জিপিএ ফাইভ পেতে চান। জিপিএ ফাইভ না পেলে তারা আত্মহত্যা করেন, তাদের মা-বাবা মারধর করেন আর শিক্ষকরা অপছন্দ করেন। এর ফলে তাদের অনেকের পড়াশোনা করার মতো আর আগ্রহ থাকে না। জিপিএ ফাইভ প্রতিযোগিতায় মুখস্থ নির্ভর এই শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে মুখস্থ করা এবং জিপিএ ফাইভের চক্কর থেকে বের হয়ে আসা হয়েছে। তাছাড়া নতুন শিক্ষাক্রমে বিভিন্ন পরীক্ষা বাদ দেয়া হয়েছে। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিভিন্ন পরীক্ষাও বাদ দেয়া হয়েছে। এখানে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
এই শিক্ষাবিদ বলেন, দুটো জিনিস আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে বাধা হিসেবে কাজ করছে। একটা হচ্ছে মাদকাসক্ত, মাদকাসক্তির বিস্তার লাভে গ্রামে যেমন রয়েছে শহরেও রয়েছে। আমি আশা করবো সবাইকে এগিয়ে আসতে এ জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে। সরকার চেষ্টা করছে কিন্তু সরকারের একার পক্ষে তা করা সম্ভব না।
আর দ্বিতীয় যেটা হচ্ছে তা হলো সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি। সমাজের সবাই এটা ব্যবহার করছেন। অনেকে আছেন যারা দৈনিক ৮-১০ ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন। এখান থেকে নিজেদেরও মুক্ত থাকতে হবে এবং পরবর্তী প্রজন্ম যারা আছে তারা এ আসক্তির দিকে যেন না যান সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইইউবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, ইইউবি ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মকবুল আহমেদ খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ইঞ্জিনিয়ার মো. আলিম দাদ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জামান
বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম সমাবর্তনে ২০১২ থেকে ফল সেমিস্টার ২০২০ সাল পর্যন্ত ৭ হাজার ৫৫৯ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েশন ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি প্রদান করেছে। এছাড়া কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড ও আটজন শিক্ষার্থীকে ভাইস-চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।