০১ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৪৪

‘কৃষিজমি কমায় বড় চ্যালেঞ্জ অল্প জায়গায় বেশি ফসল উৎপাদন’

অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজিতে আয়োজিত সেমিনার  © সংগৃহীত

অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজিতে এগ্রিবিজনেস বিভাগ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগ যৌথভাবে সেমিনারের আয়োজন করেছে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এডাস্ট অডিটোরিয়ামে ঢাকা শহরে ‘জলবায়ু সহিষ্ণু, স্মার্ট এবং মৃত্তিকাহীন বাগান’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ চেয়ারম্যান এডভোকেট লিয়াকত সিকদার।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ার্ল্ড ভেজিটেবল সেন্টারের ফারহানা ইব্রাহিম, এফএও এর প্রজেক্ট ম্যানেজার গর্ডন ডি পেদ্রো, মৎস্য অধিদপ্তরের টেকশই কৃষি প্রকল্পের পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও প্রকল্পের সাইট ওনার ও প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটি এর ট্রেজারার ফিরোজ এম হোসেন টিটু।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সালাম। তিনি তার উপস্থাপনায় বলেন, আধুনিক বিজ্ঞান আজকের পৃথিবীর মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য এবং পৃথিবীকে দূষণমুক্ত একটি গ্রহে পরিণত করতে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করে যাচ্ছে। যেহেতু কৃষিজমি দিন দিন কমে যাচ্ছে, তাই মানুষের জন্য অন্যতম বড় একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অল্প জমিতেই অনেক বেশি ফসল উৎপাদন। এমন প্রযুক্তি নিয়ে আসা যা একইসাথে পরিবেশেরও ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনবে অনেকাংশে।

তিনি বলেন, আর শুধু কৃষিজাত পণ্যেই যেহেতু পুষ্টির চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়, সাথে তাই মৎস্যজাত ও গৃহপালিত পশুর থেকে পাওয়া অন্যান্য খাদ্যের উৎসেরও ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা জরুরি। ঢাকা শহরে, বাড়ির ছাদে মাছ এবং শাক সজি চাষের জন্য ঐতিহ্যবাহী/ট্রাডিশনাল ছাদ বাগানের সাথে জলবায়ু- সহিষ্ণু, স্মার্ট এবং মাটিবিহীন বাগান পদ্ধতির তুলনা করার জন্য পরীক্ষামূলক একটি গবেষণা প্রকল্প উত্তরাস্থ ১১ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়ির ছাদে গ্রহণ করা হয়েছিল।

আরো পড়ুন: আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর থিওরিটিক্যাল পড়াশোনা চাকুরির জন্য পর্যাপ্ত নয়: নওফেল

তিনি আরো বলেন, গবেষণায় ছয়টি আধুনিক পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত ছিল: একোয়াপোনিক্স, এনএফটি হাইড্রোপনিক্স, ক্র্যাটকি হাইড্রোপনিক্স, স্ব-জলযুক্ত জিও-ব্যাগ, স্ব-পানিযুক্ত পাটের ব্যাগ এবং ঐতিহ্যগত অর্ধ ড্রামের বাগান। তিনি এগুলোর উপকারী ভূমিকা ও চ্যালেন্জসমূহের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে এগিয়ে  আসার আহবান জানান।

প্রধান অতিথি লিয়াকত সিকদার বলেন, প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে গাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে বর্তমানে আধুনিকতার যুগে, যখন একের পর এক গাছ কেটে অট্টালিকা, শিল্প-কলকারখানা, রাস্তা নির্মাণ চলছে সর্বত্র। বাংলাদেশে উৎপন্ন সবজি ও মাছ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আরো বেশি পরিমান রপ্তানি করতে হবে। আর প্রকৃতির ভারসাম্য ঠিক রাখার পাশাপাশি চারিদিক সবুজে ভরিয়ে তোলার বিকল্প নেই। তাই উদ্যোক্তাদের জন্য ছোট জায়গায় অল্প পরিসরে কিভাবে বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগিয়ে পরিচর্যা করে সুন্দর বাগান তৈরি করা যায় তার ওপর প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম তার সমাপনী ভাষণে বলেন, শহর ও শহরতলিতে বর্তমানে কমছে ফাঁকা জায়গার পরিমাণ। উল্টোদিকে, গড়ে উঠছে ছোট বড় অট্টালিকা। ছাদে বাগান করার ওপরে জোর দেওয়া হলে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে তেমনি অতিরিক্ত গরমের হাত থেকেও রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে বলেই তিনি মত প্রকাশ করেন।।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন এগ্রিবিজনেস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সোনিয়া তাবাসসুম আহমেদ ও সঞ্চালনায় ছিলেন গবেষণা প্রকল্পের কো-পিআই ও এগ্রিবিজনেস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মোশাররফ হোসেন। সেমিনারে এগ্রিবিজনেস বিভাগের অ্যাডভাইজর ড. মীর্জা হাসানুজ্জামান, কো-অর্ডিনেটর মো. মাসুদুল হাসানসহ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তানভীর রহমান ও ড. সাইফুল্লাহ রাসেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার, ডীন, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি, বিভাগীয় অ্যাডভাইজর, চেয়ারম্যান, কো-অর্ডিনেটর, শিক্ষক এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।