অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটিতে ‘স্মার্ট মৃত্তিকাহীন বাগান’ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত
বেসরকারি অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজিতে এগ্রিবিজনেস বিভাগ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের যৌথ উদ্যোগে ‘জলবায়ু সহিষ্ণু, স্মার্ট এবং মৃত্তিকাহীন বাগান’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের এডাস্ট অডিটোরিয়ামে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) চেয়ারম্যান এড. লিয়াকত সিকদার এবং অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আবদুস সালাম বলেন, আধুনিক বিজ্ঞান আজকের পৃথিবীর মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য এবং পৃথিবীকে দূষণমুক্ত একটি গ্রহে পরিণত করতে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যেহেতু কৃষিজমি দিন দিন কমে যাচ্ছে, তাই মানুষের জন্য অন্যতম বড় একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অল্প জমিতেই অনেক বেশি ফসল উৎপাদন, এবং এমন প্রযুক্তি নিয়ে আসা যা একইসাথে পরিবেশেরও ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনবে অনেকাংশে। আর শুধু কৃষিজাত পণ্যেই যেহেতু পুষ্টির চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়, সাথে তাই মৎস্যজাত ও গৃহপালিত পশুর থেকে পাওয়া অন্যান্য খাদ্যের উৎসেরও ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা জরুরি। তিনি এগুলোর উপকারী ভূমিকা ও চ্যালেন্জসমূহের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে লিয়াকত সিকদার বলেন, প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে গাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে বর্তমানে আধুনিকতার যুগে, যখন একের পর এক গাছ কেটে অট্টালিকা, শিল্প-কলকারখানা, রাস্তা নির্মাণ চলছে সর্বত্র। বাংলাদেশে উৎপন্ন সবজি ও মাছ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আরো বেশি পরিমাণ রপ্তানি করতে হবে। আর প্রকৃতির ভারসাম্য ঠিক রাখার পাশাপাশি চারিদিক সবুজে ভরিয়ে তোলার বিকল্প নেই। তাই উদ্যোক্তাদের জন্য ছোট জায়গায় অল্প পরিসরে কীভাবে বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগিয়ে পরিচর্যা করে সুন্দর বাগান তৈরি করা যায় তার উপর প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
এছাড়াও সেমিনারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম তার সমাপনী ভাষণে বলেন, শহর ও শহরতলিতে বর্তমানে কমছে ফাঁকা জায়গার পরিমাণ। উল্টোদিকে, গড়ে উঠছে ছোট বড় অট্টালিকা। ছাদে বাগান করার উপরই জোর দেওয়া হলে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে তেমনি অতিরিক্ত গরমের হাত থেকেও রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।
এছাড়াও সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ভেজিটেবল সেন্টারের ফারহানা ইব্রাহিম, এফএও এর প্রজেক্ট ম্যানেজার গর্ডন ডি পেদ্রো, মৎস্য অধিদপ্তরের টেকসই কৃষি প্রকল্পের পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, প্রকল্পের সাইট ওনার ও প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটির ট্রেজারার ফিরোজ এম হোসেন টিটু।
এছাড়াও সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান রাখেন এগ্রিবিজনেস বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সোনিয়া তাবাসসুম আহমেদ ও সঞ্চালনায় ছিলেন গবেষণা প্রকল্পের কো-পিআই ও এগ্রিবিজনেস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মোশাররফ হোসেন। সেমিনারে এগ্রিবিজনেস বিভাগের অ্যাডভাইজর ড. মীর্জা হাসানুজ্জামান, কো-অর্ডিনেটর মো. মাসুদুল হাসানসহ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তানভীর রহমান ও ড. সাইফুল্লাহ রাসেল, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার, ডিন, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি, বিভাগীয় অ্যাডভাইজর, চেয়ারম্যান, কো-অর্ডিনেটর, শিক্ষক এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।