ইউল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা কাজী শাহেদ আহমেদের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এর প্রতিষ্ঠাতা ও ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি কাজী শাহেদ আহমেদের প্রয়াণে শোক জানিয়ে এক স্মরণসভার আয়োজন করে ইউল্যাব। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান। তিনি স্মৃতিচারণে বলেন, কাজী শাহেদ আহমেদ এ বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনায় আমাদেরকে স্বাধীনতা যেমন দিয়েছেন, তেমনি দিয়েছেন সাপোর্ট। তাঁর এ দৃষ্টিভঙ্গি ইউল্যাবকে আজকের অবস্থানে আসতে সাহায্য করেছে।
আলোচকবৃন্দের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, কাজী শাহেদ আহমেদ ছিলেন একজন দৃঢ়চেতা মানুষ। তিনি একটি সবুজ ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতেন। তিনি বলতেন ভবিষ্যত হবে সবুজ এবং অর্গানিক। তিনি শখের বসে নয়, বরং দায়বদ্ধতা থেকে অর্গানিক প্রকল্পের উন্নয়ন করেছেন।
কাজী শাহেদ আহমেদের জ্যেষ্ঠ সন্তান কাজী নাবিল আহমেদ বলেন- আমার বাবা এক জীবনে বহু জীবন যাপন করেছেন। নতুনকে জানার প্রতি তাঁর বিশেষ দুর্বলতা ছিল। তাঁর মেঝো সন্তান, ইউল্যাব বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. কাজী আনিস আহমেদ বলেন, তিনি নিজে যা জানতেন, আমাদেরকে তা শেখাতেন। তিনি কোন সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের পরামর্শ নিতেন। সেটা ছিল মূলত আমাদেরকে শেখানোর জন্যই।
এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কাজী শাহেদ আহমেদের সহধর্মিণী ও ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজ সদস্য আমিনা আহমেদ, ইউল্যাবের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. জহিরুল ইসলাম ও প্রাক্তন ছাত্র গোলাম সামদানী ডন। এছাড়া ইউল্যাবের বোর্ড সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন আধুনিক সাংবাদিকতার পথপ্রদর্শক দৈনিক আজকের কাগজের প্রকাশক ও সম্পাদক, শিক্ষানুরাগী, ক্রীড়া সংগঠক, জেমকন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এবং ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রেসিডেন্ট কাজী শাহেদ আহমেদ। কাজী শাহেদ আহমেদ ১৯৪০ সালের ৭ নভেম্বর যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। ইঞ্জিনিয়ারিং পাসের পর তিনি ১৪ বছর ধরে সেনাবাহিনীতে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাকালীন প্লাটুন কমান্ডারদের একজন তিনি।
কাজী শাহেদ আহমেদ জীবনের বেশিরভাগ অংশজুড়ে নতুন ধরনের উদ্যোগ নিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। পত্রিকা, ব্যবসা কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবকিছুতেই নতুনত্বের ছোঁয়া নিয়ে এসেছেন তিনি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইউল্যাব আজ দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা আধুনিক বিশ্বের সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যোগ্য নাগরিক ও দক্ষ পেশাজীবী তৈরির কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে প্রকাশিত খবরের কাগজে বর্তমানে যে আধুনিকতার উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়, তার শুরুই হয়েছিল কাজী শাহেদ আহমেদের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘আজকের কাগজ’পত্রিকার হাত ধরে; যা তৎকালীন মুক্তমত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশে প্রথম অর্গানিক চা বাগানের প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। সাহিত্য পরিমণ্ডলেও কাজী শাহেদ আহমেদ সুপরিচিত ছিলেন। তিনি বহু গ্রন্থের প্রণেতা।