গবিতে তালাবদ্ধ ক্যান্টিন, হয়রানির শিকার সাংবাদিক সমিতি
সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) ক্যান্টিনের খাবারে বালু পাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনে তালা দিয়েছে। এ ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের উপর চাপ প্রয়োগ ও হয়রানি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৩ন জুন) সকাল ১১ টার দিকে ক্যান্টিনের খিচুড়িতে বালু পাওয়ার কথা জানান দুই শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে দুপুরে আরও কিছু শিক্ষার্থী খেতে গেলে খিচুড়িতে বালু পান। এ সময় বেশ কিছু শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখা চান।
ঘটনার প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনের অন্য পাশে থাকা শিক্ষকদের বালুর বিষয়টি জানায়। পরে ওই শিক্ষকরা খাবার না খেয়ে চলে যান। এরপর কর্তৃপক্ষের সাথে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তারা ক্যান্টিনে তালা দেন এবং ভাঙচুর করেন।
এদিকে ক্যান্টিন তালাবদ্ধ করার ঘটনা জানিয়ে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরা তাদের ফেসবুক পেইজে একটি স্ট্যাটাস দেন। এটি প্রশাসনের নজরে আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী রেজিস্ট্রার আবু মুহাম্মাদ মুকাম্মেল সাংবাদিকদের ডেকে পাঠান।
এ সময় সেখানে উপস্থিত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির বিষয়টি বিবেচনা করে স্ট্যাটাস মুছে ফেলা এবং সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান। এ ছাড়া ক্যান্টিনের বিষয়ে তিনি খাবারের মান উন্নয়ন সহ দ্রুত মালিকানা পরিবর্তন করে সমাধানের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান।
তবে সিনিয়র সহকারী রেজিস্ট্রার বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে জেরা করেন এবং এর পেছনে কারা আছে জানতে চান। একইসাথে তিনি সাংবাদিকদের সংগঠনের গঠনতন্ত্র নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি ক্যাম্পাসে সাংবাদিকতা সহ অন্য সকল সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধের হুমকি দেন।
পরবর্তীতে ক্যান্টিনের ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেয়ে তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এতে উল্টো সাংবাদিকদের দায়ী করে বলেন, তোমরা (সাংবাদিক) পরিকল্পিতভাবে ঘটনা বানিয়েছো। তোমরা নিউজ চাও, সমাধান চাও না। আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করবো না।
সিনিয়র সহকারী রেজিস্ট্রারের সংগঠন বন্ধের হুমকির ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয় মিউজিক কমিউনিটির সভাপতি আবু মুহাম্মাদ রুইয়াম বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় যেমন আমাদের একটা অস্তিত্ব, ঠিক আমরা যারা বিভিন্ন সংগঠনে যুক্ত আছি, এই সংগঠনগুলোও আমাদের অস্তিত্ব। আর অস্তিত্বে কেউ হাত দিলে আমরা কিন্তু চুপ করে বসে থাকবো না। আমরা অবশ্যই আমাদের সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য হবো।'
ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের চাপ প্রয়োগ করলে তারা অনুৎসাহিত হবে স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি অধ্যাপক আলতাফুন্নেছা মায়া বলেন, এরকম করলে তো হবে না। তাদের কথা শুনতে হবে। আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো। আর শিক্ষার্থীদের ভালো-মন্দও আমাদেরই দেখতে হবে। তা না হলে আমরা তাদের কিসের অভিভাবক?