সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ঢাবি-বুয়েটের সঙ্গে এবারও নর্থ সাউথ
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডসের (কিউএস) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিষয়ভিত্তিক র্যাংকিং-২০২৩ প্রকাশ করা হয়েছে। এই র্যাংকিংয়ে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয় এমন ৫৪টি বিষয়কে ৫ ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। এ বছর মোট ১ হাজার ৫৯৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৫ হাজার ৭০০টির বেশি একাডেমিক প্রোগ্রামের মর্যাদা ও গবেষণাকে বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে র্যাংকিংয়ে স্থান দেওয়া হয়েছে।
এবারও র্যাংকিংয়ে আলাদা দুটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে। প্রধান বিষয় (ব্রড সাবজেক্ট এরিয়া) ক্যাটাগরিতে পাঁচটি বিষয় রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, সোশ্যাল সাইন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, আটর্স অ্যান্ড হিউমেনিটিস, লাইফ সাইন্স অ্যান্ড মেডিসিন ও ন্যাচার সাইন্স। তাছাড়া নির্দিষ্ট বিষয় (স্পেসিফিক সাবজেক্ট) ক্যাটাগরিতে ৫৪টি আলাদা আলাদা বিষয় রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রকৌশল ও প্রযুক্তিতে পিছিয়েছে বুয়েট, জায়গা হয়নি ঢাবির
নির্দিষ্ট বিষয় (স্পেসিফিক সাবজেক্ট) ক্যাটাগরিতে বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় এবারও স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের তিনটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় (এনএসইউ)।
‘কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংস বাই সাবজেক্ট-২০২৩’ শীর্ষক এই র্যাংকিংয়ে এবার স্পেসিফিক সাবজেক্ট ক্যাটাগরিতে বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবার ৩৫১-৪০০তম স্থানের মধ্যে আছে। আর নর্থ সাউথের অবস্থান ৪০১-৪৫০তম এর মধ্যে। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কত নম্বরে, তা উল্লেখ করেনি কিউএস। গতবারের চেয়ে এবার পিছিয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২২ সালের র্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান ছিল ৩৫১-৪০০তম স্থানের মধ্যে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান এবার অপরিবর্তিত রয়েছে।
এছাড়া কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (স্পেসিফিক সাবজেক্ট) ক্যাটাগরিতে এবার বুয়েট ৪০১-৪৫০তম স্থানের মধ্যে আছে। গতবারের মতো এবারও এই তালিকায় রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথও। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৫৫১-৬০০তম-এর মধ্যে আর নর্থ সাউথের ৬৫১-৬৮০তম-এর মধ্যে। গতবার বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথের অবস্থান ছিল যথাক্রমে ৩০১-৩৫০তম, ৪৫১-৫০০ এবং ৬০১-৬৫০তম এর মধ্যে।
এদিকে, ব্রড সাবজেক্ট এরিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ক্যাটাগরিতে এবার বুয়েটের অবস্থান ৩৩৫তম। যেখানে গত বছর ছিল ১৮৫তম। গতবার ৩৩২তম স্থানে থাকলেও এবার সেই তালিকায় জায়গা হয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।
ব্রড সাবজেক্ট এরিয়া সোশ্যাল সাইন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ক্যাটাগরিতে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৪৫১-৫০০ এর মধ্যে। যেখানে গত বছর ছিল ২০৩তম। গতবার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ২৯৮তম স্থানে থাকলেও এবার সেই তালিকায় জায়গা হয়নি। তাছাড়া গতবার ৪৫১-৫০০ এর মধ্যে থাকা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়েরও এবার জায়গা হয়নি।
ব্রড সাবজেক্ট এরিয়ার বাকি তিন ক্যাটাগরি- আটর্স অ্যান্ড হিউমেনিটিস, লাইফ সাইন্স অ্যান্ড মেডিসিন এবং ন্যাচার সাইন্সে এবার বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান হয়নি।
আরও পড়ুন: সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনায় পিছিয়েছে ঢাবি, জায়গা হয়নি নর্থ সাউথ-ব্র্যাকের
কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংয়ে বিষয়ভিত্তিক তালিকায় একাডেমিক খ্যাতি (একাডেমিক রেপুটেশন), চাকরির বাজারে সুনাম (এমপ্লয়ার রেপুটেশন), এইচ-ইনডেক্স, শিক্ষকপ্রতি গবেষণা-উদ্ধৃতি (রিচার্স সাইটেশনস পার পেপার) এ সূচকগুলোর ওপর ভিত্তি করে মান নিরূপণ করা হয়।
এবার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ক্যাটাগরিতে বিশ্বসেরা ৩ বিশ্ববিদ্যালয় হলো-এমআইটি, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ। আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিস ক্যাটাগরিতে বিশ্বসেরা ৩ বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ ও ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড।
লাইফ সায়েন্স অ্যান্ড মেডিসিন ক্যাটাগরিতে বিশ্বসেরা ৩ বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড ও জন হপকিনস ইউনিভার্সিটি। ন্যাচারাল সায়েন্স ক্যাটাগরিতে হার্ভার্ড, এমআইটি ও কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রথম ৩ স্থান অধিকার করেছে।
তাছাড়া সোশ্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ক্যাটাগরিতে সেরা ৩ বিশ্ববিদ্যালয় হলো হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড ও স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কিউএস র্যাংকিং ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের সঙ্গে যৌথভাবে ‘সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের’ তালিকা প্রকাশ করছিল; ২০১০ সালে আলাদা হয়ে যায় কিউএস। এরপর থেকে এককভাবেই র্যাংকিং প্রকাশ করে আসছে তারা। কিউএসের প্রকাশিত সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাকে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য র্যাংকিংগুলোর একটি মনে করা হয়।