প্রথমবারেই নর্থ সাউথের বাজিমাত
যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) প্রকাশিত সর্বশেষ র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের মাত্র পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান করে নিয়েছে। এ তালিকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একমাত্র নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি স্থান করে নিয়েছে। দেশের বিশ্ববিদ্যালগুলোর মধ্যে শীর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। তৃতীয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
বুধবার (১২ অক্টোবর) এ তালিকা প্রকাশ করে টাইমস হায়ার এডকেশন। বিশ্বের ১০৪টি দেশের এক হাজার ৭৯৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যায়নের ভিত্তিতে এ র্যাঙ্কিং করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাদান (টিচিং), গবেষণা (রিসার্চ), গবেষণা-উদ্ধৃতি (সাইটেশন), আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি (ইন্টারন্যাশনাল আউটলুক) এবং ইন্ডাস্ট্রি ইনকামের (শিল্পের সঙ্গে জ্ঞানের বিনিময়) ওপর ভিত্তি করে তালিকাটি করা হয়েছে।
এ তালিকায় নর্থসাউথের অবস্থানও ৬০১ থেকে ৮০০ এর মধ্যে। তৃতীয় বাকৃবি রয়েছে ১২০১ থেকে ১৫০০ এর মধ্যে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানও এর মধ্যে। তালিকায় ছয় বছর ধরে এক নম্বরে আছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এরপরের অবস্থানে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ম্যাসাচুসেট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি।
পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় সেরা র্যাঙ্কিংয়ে থাকলেও তালিকায় আরও ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে আটটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। বাকিগুলো হলো যথাক্রমে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি), ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব), ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) এবং বরেন্দ্র ইউনিভার্সিটি।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার জন্য এটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাঙ্কিংয়ে স্থান করে নিয়েছে। এর মধ্যে একমাত্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এনএসইউ। এ অর্জনের পর উচ্চশিক্ষায় শ্রেষ্ঠত্বের জন্য এনএসইউর সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
আরো পড়ুন: সাত বছর পর বিশ্বসেরা র্যাংকিংয়ে এগোল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
এবারের তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৬০১-৮০০-এর মধ্যে। সাত বছরের মধ্যে র্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে ভালো অবস্থান এটি। এর আগে ২০১৬ সালে দেশসেরা ছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়। পরের বছর ২০১৭ সালে তালিকায় জায়গা হয়নি দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের। ২০১৮ সালে এক হাজারেরও পর চলে যায় ঢাবি। ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালেও এক হাজারে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। ২০২২ সালে ঢাবির অবস্থান ৮০১-১০০০-এর মধ্যে।
টাইমস হায়ার এডুকেশনের র্যাঙ্কিং নির্ধারণে বিবেচিত সূচকগুলো বিশদ ব্যাখ্যাও রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষাদান সূচকটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক মান, অর্থাৎ র্যাঙ্কিংয়ে নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়। দ্বিতীয় সূচক গবেষণায় দেখা হয় সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকর্মের খ্যাতি-জরিপ, গবেষণা থেকে আয় এবং গবেষণার সংখ্যা ও মান।
গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি সূচক হচ্ছে গবেষণা-উদ্ধৃতি। এ ক্ষেত্রে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত কাজ বিশ্বব্যাপী গবেষকদের কতসংখ্যকবার উদ্ধৃত হয়। আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি সূচকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী-কর্মী অনুপাতের সঙ্গে দেখা হয় আন্তর্জাতিক যুক্ততাও।
ইন্ডাস্ট্রি ইনকামে আবিষ্কার, উদ্ভাবন ও পরামর্শের মাধ্যমে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পকে সহযোগিতার সক্ষমতা দেখা হয়। অর্থাৎ ব্যবসায়ীরা গবেষণায় অর্থ ঢালতে কতটা উৎসাহী এবং বাণিজ্যিক বাজারে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিশ্ববিদ্যালয় কতটুকু সক্ষম, সেটিই এ সূচকের মূল কথা।
র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দেখতে এখানে ক্লিক করুন।