টিকা পাবে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরাও: প্রধানমন্ত্রী
১২ বছরের কম বয়সীদের করোনার টিকার আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটা হলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও টিকা পাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বয়সের আওতা কমানোর লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কাছে আবেদন করা হয়েছে এবং শিগগিরই তা পাওয়া যাবে বলে বলে আশা করি।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসসি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ ফেলোশিপ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হন।
আরও পড়ুন: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কুল-কলেজ আমরা খুলে দিয়েছি। এখন স্বাভাবিক ভাবেই চলবে। সেই সঙ্গে টিকাও.. এবং আমরা প্রাইমারি পর্যন্ত টিকা... কোন বয়স পর্যন্ত টিকা দেওয়া যেতে পারে। আমরা ১২ বছর পর্যন্ত দিচ্ছি। ডব্লিউএইচও’র কাছে ইতোমধ্যে আবেদন করা হয়েছে, আরও অল্প বয়সের শিশুদের জন্য টিকা দেওয়ার অনুমতির জন্য। আমার মনে হয় এটা এসে যাবে। কাজেই আমরা তখন মনে হয় সবাইকে টিকা দিতে পারবো। যদি ৭-৮ বছর থেকে বা ১০ বছর থেকে টিকা দিতে পারি, তাহলে আমাদের প্রাইমারিতে আর কোনও অসুবিধা হবে না। তারা নিশ্চিন্তে স্কুলে যেতে পারবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা স্কুল খুলে দিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে তাদের সুরক্ষাটা একান্তভাবে দরকার এবং আমরা সেটা করবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। আগামীদিনের বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, দেশকে এমনভাবে গড়তে চাই, যেন সবাই প্রযুক্তি জ্ঞান সস্পন্ন হয়। কিছুটা হলেও যেন তারা প্রযুক্তির বিষয়ে জানে।
আরও পড়ুন: বিপক্ষে অধিকাংশ শিক্ষক, গুচ্ছে যাচ্ছে না জবি?
গবেষণা না থাকলে আজকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারতাম না। এ জন্য আমি গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিই। বিশেষ করে বিজ্ঞান আর মেডিক্যাল সায়েন্সের গবেষণা। মেডিক্যালের ওপর আমাদের গবেষণা কিছুটা কম। সেখানে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। বেশি করে আমাদের গবেষণা করতে হবে। গবেষণাই পারে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।
দেশের প্রায় সত্তর ভাগের কাছাকাছি মানুষ টিকা পেয়েছেন। টিকা এখন সবাইকে নিতে হবে। এর আগে আমি দেখেছি অনীহা। কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি মানুষের ভেতরে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে চলতি বছরে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’ এবং বিজ্ঞানী ও গবেষকদের মধ্যে বিশেষ অনুদান প্রাপ্ত গবেষকদের হাতে সম্মাননার চেক তুলে দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
দেশে-বিদেশে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এমএস, এমফিল, পিএইচডি ও পিএইচডি-উত্তর প্রোগ্রামের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’ দেওয়া হয়। ২০১০-১১ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৯৬ জনকে ২২৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এমফিল, পিএইচডি ও পিএইচডি-উত্তর পর্যায়ে ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’ দেওয়া হয়। ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত ২২ হাজার ২২০ জন ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষককে ১৩৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেষ দিনে ভিসি ফারজানার বিরুদ্ধে যে কারণে শিক্ষার্থীদের কাঁঠাল মিছিল
ফেলোশিপের পাশাপাশি বিজ্ঞানী ও গবেষকদের মধ্যে বিশেষ অনুদান দিয়েছে সরকার। গত ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত পাঁচ হাজার ২০টি প্রকল্পের অনুকূলে ১৭৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।