০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:৩০

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিল চায় ঢাবির আইইআর

শিক্ষার্থী ও ঢাবি লোগো  © ফাইল ফটো

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর)। সম্প্রতি শিক্ষাবোর্ড আইনের খসড়া প্রস্তাবের ওপর আইইআর শিক্ষকদের মতের ভিত্তিতে তৈরি এক প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য উঠেছে।

আইইআর এর শিক্ষকরা পিইসি পরীক্ষা বাতিল করে একটি ‘কম্প্রিহেনসিভ’ শিক্ষা আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেন।

জানা গেছে, গত নভেম্বর মাসে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড আইন-২০২১ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়। প্রস্তাবিত আইনে বোর্ডের ২১টি কার্যাবলী বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। যার মধ্যে নয়টি মূল্যায়ন ও নিরীক্ষা সম্পর্কিত। এই ৯টির মধ্যে পাঁচটিই পিইসি পরীক্ষা সংক্রান্ত দুটি জাতীয় মূল্যায়ন এবং অপর দুটি মূল্যায়ন ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া সম্পর্কিত।

সূত্র জানায়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে খসড়ার ওপর মতামত আহ্বান করে। এই খসড়ার ওপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ২০ নভেম্বর একটি কর্মশালার আয়োজন করে। এতে শিক্ষকদের মতের ভিত্তিতে একটি পর্যালোচনা রিপোর্ট তৈরি হয়। যা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পর্যালোচনা শেষে এই রিপোর্টে মোট পাঁচটি প্রস্তাব দিয়েছেন আইইআরের শিক্ষাবিদরা।

এগুলো হচ্ছে-১. প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা একটি হাইস্টেক ও সনদনির্ভর পরীক্ষা। এ ধরনের পরীক্ষা শিশুদের ওপর অত্যন্ত মানসিক চাপ তৈরি করে। এই চাপ নিরসন, তাদের সামগ্রিক ও সুষ্ঠু বিকাশ এবং আনন্দের সঙ্গে শিক্ষালাভের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করতে হবে।

২. প্রাথমিক শিক্ষার মূল্যায়ন ব্যবস্থার উন্নয়নে কোনো প্রতিষ্ঠান করতে হলে তা হতে হবে প্রাগ্রসর ও ভবিষ্যৎমুখী। রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়ন এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল সময়ের সঙ্গে সার্থকভাবে অভিযোজনের জন্য শিশুকে প্রস্তুত করার মতো মূল্যায়ন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

৩. প্রাথমিক শিক্ষার মূল্যায়ন ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রতিষ্ঠানটি হবে স্বায়ত্তশাসিত। শিক্ষামূল্যায়ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কোনো তৃতীয় প্রতিষ্ঠানকেও এই দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।

৪. প্রাথমিক শিক্ষার মূল্যায়ন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে তৈরি করতে হবে।

৫. শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে একটি কম্প্রিহেনসিভ শিক্ষা আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন।

আইইআর এর শিক্ষকদের প্রতিবেদনে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বিষয়ে বলা হয়, প্রস্তাবিত আইন, গুণগত শিক্ষা বিতরণের স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড গঠনে সুপারিশ করা হয়। যদিও বোর্ডের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের পরিসর মূলত পিইসি পরীক্ষা ও জাতীয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীর প্রান্তিক যোগ্যতা মূল্যায়নকেন্দ্রিক। এই ধরনের প্রান্তিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ফিডব্যাক প্রদান ও শিক্ষার্থীর শিখন উন্নয়নের সুযোগ সীমিত। প্রস্তাবিত আইনে বোর্ডের ২১টি কার্যাবলী বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। এই আইনে শিক্ষার্থী মূল্যায়নের সংকীর্ণ রূপ প্রাধান্য পেয়েছে।