খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে সেই সিলিমপুর স্কুলের শিক্ষার্থীরা
তিনদিন আগেও সবার চোখের সামনে ছিলো রাজবাড়ী জেলার চর সিলিমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। কিন্তু এখন তা নদীগর্ভে। আর পদ্মায় ভবন বিলীন হবার পরে এখনও নতুন কোন ঠিকানা না হওয়ায় স্কুল হারানোর শোককে সঙ্গী করে খোলা আকাশের নিচেই ক্লাস করছে প্রতিষ্ঠানটির ১০৮ শিক্ষার্থী।
গত শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহর রক্ষা বাঁধের ডানের ১০০ কিলোমিটার সিসি ব্লক ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় চর সিলিমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়।
দুদিন পরে গতকাল রোববার সকালে দেখা গেছে, খোলা আকাশের নিচে চতুর্থ শেণির এক শিক্ষার্থী বসে আছে ক্লাসের আশায়। চারপাশে তার মতো অপেক্ষমান আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী।
জানতে চাইলে তারা বলে, আমাদের ক্লাসরুমে ক্লাস করতে মন চায়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঈমান আলী জানান, স্কুলটি ভেঙে যাওয়ার কারণে শিশুদের পাঠদানের কোনো সুযোগ নেই। কিছু আসবাবপত্র আমরা রক্ষা করেছি। স্থানীয় একজন বাসিন্দা জমি দিয়েছেন। পূর্বে টিনের যে ঘর ছিল সেটা ভেঙে নতুন ওই জমিতে ঘর বানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী জানান, শিক্ষার্থীদের যেন ক্ষতি না হয় সেজন্য তারা স্থানীয় কারো বাড়িতে বা অন্য কোনোভাবে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলেছেন।
আর সেই ব্যবস্থাই যেন হলো খোলা আকাশের নীচে।
আরও পড়ুন: নদীগর্ভে স্কুল— এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা চিন্তিত
প্রধান শিক্ষক ঈমান আলী জানিয়েছেন, সরকারের কাছ থেকে এখনও কোনো সহায়তা পাননি তারা।
তবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রয়েছে উল্লেখ করে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাওমি মো. সায়েম জানিয়েছেন, তারা নতুনভাবে স্কুল করার বিষয়ে চিন্তা করছেন।
তবে সরকারী কর্মকর্তার এমন আশ্বাস থাকলেও স্থানীয় জনগণের মাঝে দেখা গেছে ক্ষোভ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মিজানপুর ইউনিয়নের একজন বাসিন্দা বলেন, সরকার কোনো ঘটনা ঘটলে চিন্তা করে। ঘটনার আগে চিন্তা করলে এসব ঘটত না। যে স্কুলগুলো ঝুঁকিতে আছে সেগুলোর ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।