১০ মাস ভাতা পাচ্ছেন না প্রাথমিকের প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২১ হাজার শিক্ষক সরকারি প্রশিক্ষণ নিয়েও গত ১০ মাস ধরে ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মদক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়াতে নিয়োগের পরপরই তাদের এক বছর মেয়াদি সিইনএড (সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন) অথবা দেড় বছর মেয়াদি বুনিয়াদি ডিপিএড (ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন) প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটগুলোতে (পিটিআই) এ প্রশিক্ষণ নেন তারা।
করোনাকালে তিন মাস সরাসরি প্রশিক্ষণ দিয়ে পরে তাদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হয়। ডিপিএড প্রশিক্ষণ চলার সময় প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা করে ভাতা এবং কিট অ্যালাউন্স বাবদ এককালীন ১৮ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। অনলাইনে ক্লাস করা এবং নিয়মিত অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করে পিটিআইয়ে পৌঁছে দিতে হতো বলে পিটিআই কর্তৃপক্ষ তাদের প্রশিক্ষণ ভাতার পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল।
তবে অতিরিক্ত অর্থ দূরে থাক, নিয়মিত ভাতাই এখনও পাননি বলে অভিযোগ করেছেন প্রশিক্ষণার্থীরা।
তারা বলছেন, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুন- এই ছয় মাসের ভাতা দেওয়া হলেও গত বছরের জুলাই-২০২০ থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসের ভাতা তারা এখনও পাননি। যদিও করোনার মধ্যেই তারা সরাসরি পিটিআইয়ে গিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। হঠাৎ চূড়ান্ত পরীক্ষা হওয়ার কারণে অনেক প্রশিক্ষণার্থীকে স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ-তিন গুণ বেশি বাসা ভাড়া দিয়ে সংশ্নিষ্ট পিটিআইর আশপাশে বাসা ভাড়া করতে হয়েছে। কিন্তু পিটিআই কবে তাদের প্রাপ্য ভাতা দেবে, তা অনিশ্চিত।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ডিপিএড প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা পাওয়া তাদের অধিকার। এ বিষয়ে আমরা নেপ মহাপরিচালক এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করি, দ্রুতই তারা ভাতা পাবেন।
প্রশিক্ষণার্থীরা বলেন, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ডিপিএড প্রশিক্ষণার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করতে গিয়ে অনেক বিড়ম্বনায় পড়েছি। এখন ভাতার ক্ষেত্রেও বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের জুন পর্যন্ত ১২ মাসে ৩৬ হাজার টাকা পাব। এই টাকা পেতে মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও নেপ মহাপরিচালকের কাছে দাবি জানাই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি যৌথভাবে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকে। অধিদপ্তর অর্থায়ন করে। একাডেমি কোর্স-কারিকুলাম পরিচালনা করে।
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) মহাপরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, কিছু জটিলতার কারণে শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ ভাতা পাননি। বিধান ছিল ফেস টু ফেস প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। করোনা এসে যাওয়ায় প্রশিক্ষণ অনলাইনে দেওয়া হয়েছে। এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একটি নীতিমালা করে দিয়েছে, করোনাকালে অনলাইনে প্রশিক্ষণ, সেমিনার করা যাবে। আশা করছি, খুব শিগগির শিক্ষকরা এ ভাতা পেয়ে যাবেন।