সিদ্ধান্তহীনতায় থমকে প্রাথমিকের শিক্ষা, দিশাহীন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা  © ফাইল ফটো

চলমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় বাতিল করে দেয়া হয়েছে চলতি বছরের প্রাথমিক সমাপনী, জেএসসি- জেডিসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। এসময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রথম থেকে শুরু করে নবম শ্রেণী পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।

তবে মাধ্যমিকে অর্থাৎ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে মূল্যায়নের কথা থাকলেও প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা কিসের ভিত্তিতে ওপরের শ্রেণিতে প্রমোশন পাবে, সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি সরকারের পক্ষ থেকে। এতে করে দিশাহীন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এদিকে চলতি এই শিক্ষাবর্ষ শেষ হতে আর বাকি মাত্র ৪০ দিন। এরই মধ্যে পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন পর্যন্ত প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা।

এ বিষয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্রুত সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া উচিত, যেন বিদ্যালয়গুলো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে।

এর আগে এ বিষয়ে সচিবালয়ের নিজ দফতরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, করোনা পরিস্থিতির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটির মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে স্ব স্ব বিদ্যালয় মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করবে। তবে নির্দিষ্ট কোনো প্রক্রিয়া বা পদ্ধতির কথা তিনি বলেননি। অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

তবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে নম্বর দেওয়ার কোনো নিয়ম রাখা হয়নি। মূল্যায়নের ক্ষেত্রে চারটি সূচক ‘অতি উত্তম, উত্তম, ভালো ও অগ্রগতি প্রয়োজন’ রাখা হয়েছে। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষকরা।

তারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা নতুন ক্লাসে উত্তীর্ণের ক্ষেত্রে রোল নম্বর হিসেবে বিবেচনা করতে হয়। শিক্ষার্থীদের কীভাবে রোল নম্বর নির্ধারণ করা হবে সে ব্যাপারে কোনো নির্দেশনাই দেওয়া হয়নি এখনো। এ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাসাইনমেন্ট ছাত্রছাত্রীদের সরবরাহ করার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। কারণ অ্যাসাইনমেন্ট শিক্ষার্থীদের দিতে হয় ফটোকপি করে। সেক্ষেত্রে হাজার হাজার টাকা খরচ হচ্ছে স্কুলগুলোর।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষক নন এমপিওভুক্ত। ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে করোনার কারণে টিউশন ফি আদায় করা সম্ভব হয়নি। অনেক অভিভাবক অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কে জানে না। তাই তাদের ফটোকপি করে সরবরাহ করতে হয়।

প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমার পর গত আগস্ট মাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কওমি মাদরাসা খোলার অনুমতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যেই ইংলিশ মিডিয়ামের ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেলের পরীক্ষা গত অক্টোবরে শুরু হয়ে কোনো কোনো পরীক্ষা চলছে এখনো। তবে প্রাথমিকে এখনও কোনো কার্যকরি সিদ্ধান্ত না আসায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা।


সর্বশেষ সংবাদ