তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা থাকছে না, ২০২২ সাল থেকে কার্যকর

  © প্রতীকী ছবি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক স্তর থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিশুদের কোনো পরীক্ষা থাকবে না। শিশুদের ওপর থেকে পরীক্ষার চাপ কমাতে শিক্ষাক্রম থেকে এসব শ্রেণির পরীক্ষা উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষার পরিবর্তে এসব শ্রেণিতে চালু হচ্ছে ‘ধারাবাহিক মূল্যায়ন’। ২০২২ সাল থেকে এ ক্লাস-পরীক্ষা মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু হচ্ছে।

২০২১ সাল থেকে এটি কার্যকর করার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে না। ২০২২ সাল থেকে এই প্রক্রিয়া পুরোদমে কার্যকর হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে ২০২১ সালে নতুন পাঠ্যসূচি শুরু করার ঘোষণা দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। চলতি বছর পরীক্ষামূলকভাবে ১০০ স্কুলে তা চালুও করা হয়। নতুন কারিক্যুলামে পাঠ্যবই তৈরি করার কথা থাকলেও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) তৈরি করতে পারছে না। এ কারণে ২০২১ সাল ক্লাস মূল্যায়ন পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নাও হতে পারে। তবে ২০২১ সাল থেকে এটি কার্যকর হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাক-প্রাথমিক স্তর থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা উঠিয়ে দেওয়ায় প্রাথমিক স্তরের পুরো শিক্ষাক্রম (কারিক্যুলাম) নতুন করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে নতুন করে লেখা হচ্ছে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির সব বই। এই বই আগামী ২০২২ সালে ছাপিয়ে সারাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। এরপরই পরীক্ষা উঠিয়ে দিয়ে ‘ধারাবাহিক মূল্যায়ন’ কার্যকর করা হবে।

এ ব্যাপারে  প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দিয়ে ক্লাস মূল্যায়ন করে উত্তীর্ণ করার সিদ্ধান্ত হয়। এজন্য বিভিন্ন জেলার ১০০টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষামূলকভাবে এ পদ্ধতি চালুও করা হয়েছে। তবে ২০২১ সাল থেকে সারাদেশের সাড়ে ৬৫ হাজার বিদ্যালয়ে কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত থাকলেও সেটি কার্যকর সম্ভব হচ্ছে না। মূলত করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণেই সেটি আগামী বছর থেকে কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান অধিদফতর মহাপরিচালক।

জানা গেছে, গত বছরের ১৩ মার্চ এক অনুষ্ঠানে শিশুদের ওপর পরীক্ষার চাপ কমাতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অতিরিক্ত চাপে লেখাপড়া নিয়ে শিশুদের মধ্যে যেন ভীতি তৈরি না হয় সেজন্য শিক্ষক ও অভিভাবকদের নজর দিতে অনুরোধ রাখেন প্রধানমন্ত্রী।

ওই দিন জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, শিশুদের শিক্ষার জন্য অতিরিক্ত চাপ দেওয়া উচিত না। তাদের পড়াশোনাটা তারা যেন খেলতে খেলতে, হাসতে হাসতে সুন্দরভাবে নিজের মতো করে নিয়ে পড়তে পারে সেই ব্যবস্থাটাই করা উচিত। সেখানে অনবরত পড়, পড়, পড়- বলাটা বা তাদের ধমক দেওয়াটা...এভাবে আরও বেশি চাপ দিলে শিক্ষার উপর আগ্রহটা কমে যাবে। একটা ভীতি সৃষ্টি হবে। সেই ভীতিটা যেন সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আমাদের শিক্ষক ও অভিভাবকদের আমি অনুরোধ করব।


সর্বশেষ সংবাদ