প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ের
করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা বাতিলের প্রস্তাব করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এবং সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেনের স্বাক্ষরিত এর সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত ৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়। সেখানে পিইসি পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত হয়। সার্বিক পর্যালোচনা করে পিইসি পরীক্ষা না নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মূল্যায়ন করে পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীতকরণের কার্যকম করা যেতে পারে।
এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে চলতি বছরের মেধাভিত্তিক বৃত্তি প্রদান সম্ভব হবে না। তবে উপবৃত্তি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে চলতি বছরের পিইসি ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা গ্রহণ না করতে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন প্রয়োজন বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সে আলাকে এবার পিইসি ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা হবে কি না তা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করছে। এ প্রসঙ্গে সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণ না করা সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’
সূত্র জানায়, বৈঠকে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা না নেওয়ার ব্যাপারেও আলোচনা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও সারসংক্ষেপ পাঠানোর কথা রয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন সম্প্রতি বলেন, ‘জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। অ্যাপ্রোপ্রিয়েট অথরিটির অ্যাপ্রুভাল ও অ্যাপ্রোপ্রিয়েট অথরিটির মাধ্যমেই ঘোষণা দেওয়া হবে।’
প্রাথমিকের সারসংক্ষেপে আরো বলা হয়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছু দেশ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় খুলেছে। জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া বিদ্যালয় খুললেও ফের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্ধ করেছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশে বিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি। সেপ্টেম্বর মাসে খুলে দেওয়া হলেও অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে না-ও পাঠাতে পারেন।
ফলে যারা যাবে এবং যারা যাবে না, তাদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি হবে। সংশোধিত পাঠ পরিকল্পনা মোতাবেক পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা নিতে আরো প্রায় ৫০ কার্যদিবস পাঠ প্রয়োজন। সেপ্টেম্বরে বিদ্যালয় খোলা না গেলে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের মধ্যে অবশিষ্ট পাঠদান সম্ভব হবে না।
পাঠ পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ১৩১ কর্মদিবস নির্ধারিত। করোনার কারণে বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার আগে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পাঠদান হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটিও ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এতে মোট ৭১ কার্যদিবস বন্ধ থাকবে। ফলে পঞ্চম শ্রেণির ৪০৬টি স্বাভাবিক পাঠ সম্ভব হবে না।