আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই প্রাথমিকের নতুন কার্যক্রম শুরু
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২০, ০৫:০৩ PM , আপডেট: ০১ আগস্ট ২০২০, ০৫:০৩ PM
চলতি আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি কার্যক্রম (ক্লাস) বাংলাদেশ বেতারসহ কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে শুরু করা হবে। চলমান কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীসহ সব শিক্ষার্থীর লেখাপড়া নিশ্চিত করতে এ ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রেডিওর মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলে অভিভাবকদের মোবাইলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। রেডিওর মাধ্যম নেওয়া প্রতিটি ক্লাসের শেষে অভিভাবকদের বিষয় কোড সেন্ড করতে হবে । আর এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হবে সফটওয়্যারের মাধ্যমে। শিক্ষার্থীর তথ্য সংরক্ষণের জন্য সফটওয়ার প্রস্তুতির কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ্ জানান, প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সাথে সম্পৃক্ত করতে আমরা কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে পাঠদানের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এটি বাস্তবায়নের খুব কাছেই রয়েছি আমরা। আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই আমরা সম্প্রচার শুরু করব। ইতোমধ্যে আমাদের বেশকিছু ক্লাসের রেকর্ডিং সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এটি একটি মাইলফলক। শুধু দেশেই নয়; পুরো এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রাথমিকের শ্রেণি কার্যক্রম রেডিওতে যুক্ত হবার ঘটনা এটিই প্রথম। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাব। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু হবে।
শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে মহাপরিচালক বলেন, আমরা সফটওয়্যারের মাধ্যমে একটি জরিপ করেছিলাম। সেখানে দেখা গেছে, ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থীদের বাড়িতে টেলিভিশন রয়েছে। ১৪-১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাশের বাগিতে গিয়ে টেলিভিশন ক্লাসে অংশ নিচ্ছে। ফলে গড়ে ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী টেলিভিশন পাঠদানের সাথে সম্পৃক্ত। মোবাইল ফোনের জরিপে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার শিক্ষার্থী জরিপ করে দেখা গেছে, ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থীকে কন্টাক্ট করা সম্ভব হবে। এই জরিপ সম্পন্ন হলে আমরা আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বেতারের মাধ্যমে প্রাথমিকের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করার পূর্বেই সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জানিয়ে দেওয়া হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যক্রম ফলপ্রসূ করতে কাজ করবেন। প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকরা অভিভাবকদের সচেতন করবেন বিভিন্ন মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফায় এই ছুটি বাড়িয়ে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ‘ঘরে বসে শিখি’ শীর্ষক শ্রেণি কার্যক্রম চলছে গত ৭ এপ্রিল থেকে। এই শ্রেণি কার্যক্রম ‘ঘরে বসে শিখি’ শিরোনামে ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষা বাতায়নে আপলোড করা হচ্ছে শ্রেণি কার্যক্রমের ভিডিও। পাশাপাশি ‘ঘরে বসে শিখি’ শিরোনামে নতুন একটি ওয়েব পোর্টালও তৈরি হচ্ছে স্থায়ীভাবে, যা করোনা পরবর্তীতেও অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের স্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে পরিচালিত হবে।