পদ্মার বুকে বিলীন হলো চরাঞ্চলের আরও এক বাতিঘর
পদ্মার ভাঙ্গনে এবার বিলীন হলো চরাঞ্চলের বাতিঘর খ্যাত মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের ৭৭নং কাঁঠালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিদ্যালয়টি ধসে পড়ে।
এদিকে নিজেদের উদ্যোগে জিও ব্যাগ ফেলে প্রাণপণ চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হলো না চরাঞ্চলের এই বাতিঘরটির। এর ফলে অনিশ্চিত হয়ে গেল বিদ্যালয়ের প্রায় আড়াইশ ছেলেমেয়ের শিক্ষা।
এদিকে ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে বান্দরখোলা কাজিরসুরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন, বান্দারখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন এবং চরের ৪ টি ইউনিয়নের বিশাল এলাকা। জল উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে চর অঞ্চলগুলিতে জিও-ব্যাগ ফেলে দেওয়া অব্যাহত রেখেছে।
স্থানীয় ও বিদ্যালয়ের সভাপতি জুলহাস বেপারী জানান, পদ্মার জল নেমে যাওয়ার সময় একটি খালের পাশের ৭৭নং কাঁঠালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবনটির বৃহৎ অংশ বিলীন হয়। বিদ্যালয়টিতে ২৭২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। মাত্র কয়েকদিন আগে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে বন্দরখোলা ইউনিয়নের নুরুদ্দিন মাদবরকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ভবনটি নদীগর্ভে যায়। এখন ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন, কাজির সুরা সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
তিনি আরও জানান, নদী ভাঙ্গন শুরু হওয়ার পর কয়েকদিন আগে চীফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরীর নির্দেশে বিদ্যালয় ফান্ড থেকে ৬ শ ব্যাগ বালুর বস্তা ফেলা হয়েছিল। কিন্তু তীব্র স্রোতের কারণে বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান বিএম আতাউর রহমান আতাহার, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মাহতাফ উদ্দিন, জাহিদ হোসেন মোল্লা, মিনহাজুর রহমান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউলসহ শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বিলীন হওয়া বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন। ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
কাঁঠালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তার জানান, বিলীন হওয়া বিদ্যালয়টি ভাঙ্গনের ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া নিয়ে চিন্তায় আছি। খুবই কষ্ট লাগছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় এক মাস ধরেই আমরা ভাঙ্গন আতঙ্কে ছিলাম। বিদ্যালয়টি রক্ষায় চীফ হুইপ স্যারের নির্দেশে গত শুক্রবার ৬শ ব্যাগ বালুর বস্তা ফেলা হয়েছিল। পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে আর রক্ষা করা গেল না।