প্রাথমিকের বই কেনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতের আহবান জনপ্রিয় লেখকদের
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বই কেনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতের আহবান জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট লেখকরা। তাদের পক্ষে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বিবৃতি পাঠিয়েছেন গণমাধ্যমে। এতে সব লেখকদের সরকারি সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিতের আহবান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ১৫০ কোটি টাকার বই ক্রয় করবে। মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগকে অভিনন্দন জানাই। বাংলাদেশে প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় বিশাল অংকের বই ক্রয় করা হচ্ছে। এ জন্যে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাই। তিনি স্বচ্ছতা পছন্দ করেন। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।'
তারা বলেন, বই ক্রয়ের পদ্ধতি নির্ধারণে সম্পূর্ণ এখতিয়ার মন্ত্রণালয়ের, এতে স্বচ্ছতা থাকা বাঞ্ছনীয়। করোনাকালে সৃজনশীল প্রকাশকরা দুরবস্থার মধ্যে দিন অতিবাহিত করছেন। এ সময় বই ক্রয়ের সংবাদ লেখক, প্রকাশক সবার জন্য আর্শীবাদ স্বরূপ। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকজন লেখক-প্রকাশক সুফল ভোগ করবে আর, বৃহৎ সংখ্যক লেখক-প্রকাশক সরকার প্রদত্তসুফল থেকে বঞ্চিত হবে- এই অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না।’
তারা বলেন, এই ধরনের অস্বচ্ছ কাজ সমর্থনযোগ্য নয়। অনেক লেখক বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বই লিখেছেন। বই ক্রয়ের পূর্বে বই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জানা আবশ্যক।
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ‘বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি’ থেকে বই ক্রয় প্রক্রিয়া স্থগিত করে সকল প্রকাশককে তালিকা জমা দেওয়ার সুযোগ দিয়ে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বই নির্বাচন করে দ্রুত বই ক্রয় করার জন্য পত্র দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর প্রেরিত চিঠির কপি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য পিএস বরাবর মেইল করা হয়েছে। কিন্তু দুই সপ্তাহ অতিক্রান্ত হওয়ার পরও চিঠির কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। পরে সমিতি থেকে মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর আরও একটি পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
তারা বলেন, অন্যান্য মন্ত্রণালয়, বিশেষ করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের জন্য প্রতি বছর যে পদ্ধতিতে বই ক্রয় করে সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা হোক। সৃজনশীল প্রকাশকদের নিকট উপযুক্ত বইয়ের তালিকা ও নমুনা কপি জমা নেওয়া হোক। দেশের বিশিষ্ট লেখক, বুদ্ধিজীবী, প্রকাশক সমিতির প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে নির্বাচন সম্পন্ন করে বই ক্রয় করা আবশ্যক।
দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে করোনাকালীন দুঃসময়ে কোনো ধরনের অনিয়ম ও অস্বচ্ছতা কাম্য নয় বলে তারা উল্লেখ করেন।
বিবৃতিদানকারী লেখকরা হলেন- হাসান আজিজুল হক, নির্মলেন্দু গুণ, মুনতাসীর মামুন, রামেন্দু মজুমদার, সেলিনা হোসেন, আবুল মোমেন, মুহম্মদ জাফর ইকবাল, সুব্রত বড়ুয়া, মোরশেদ শফিউল হাসান, অসীম সাহা, আবুল আহসান চৌধুরী, ফরিদুর রেজা সাগর, ইমদাদুল হক মিলন, আমীরুল ইসলাম ও আনিসুল হক।