প্রাথমিকে ছুটির মেয়াদ আরও বাড়ছে: ডিজি
করোনা প্রাদুর্ভাবে বন্ধ থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটির মেয়াদ আরও বাড়ছে। করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি উন্নত না হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান ছুটি ১৫ জুন শেষ হচ্ছে। সরকারের সম্মতি পেলে বাড়ানো ছুটির মেয়াদ আজ-কালকের মধ্যে জানিয়ে দেবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. ফসিউল্লাহ। তিনি শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষার্থীদের করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখাই এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। তবে তাদের পাঠদান চালিয়ে যেতে হবে। যেহেতু এই মুহূর্তে ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কোন উল্লেখযোগ্য উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না, তাই সঙ্গত কারণেই বলা যায় ১৫ জুনের পরও স্কুল খোলা হচ্ছে না।
ছুটি কতদিন বাড়তে পারে এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, তবে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর স্কুলে ছুটির বৃদ্ধির বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করে আদেশ জারি করা হবে।
এদিকে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ ছুটির মেয়াদও বাড়ছে। এ বিষয়ে আজ-কালকের মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে বলে জানা গেছে। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ছুটি বাড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হবে।
গত ১৭ মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের কারণে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি চলছে। আবারও ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের মো. সচিব মো মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, স্কুল-কলেজের ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হবে কি হবে না, হলে কতদিন তা নির্ভর করছে জনপ্রশাসন থেকে সাধারণ ছুটির বিষয়ে আদেশ পাওয়ার ওপর। আজ রোববার স্কুল-কলেজের ছুটির বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হতে পারে।
এদিকে গত ৩১ মে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে নাগাদ খুলতে পারে- এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ধাপে ধাপে খুলে দেয়া হবে। তখন তিনি আরও বলেছেন, এই মুহূর্তে আমরা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্মুক্ত করতে চাচ্ছি না। কেননা আমরা চাই না- আমাদের ছেলে-মেয়েরা করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হোক। তারা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদেরকে আমরা ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। সেজন্য এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্মুক্ত করব না। তবে করোনা পরিস্থিতি যদি কাটিয়ে উঠতে পারি তাহলে যতটুকু সম্ভব খুলে দেব। পরে অবস্থা বুঝে আরও উন্মুক্ত করব।
এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা এখন বাড়িতে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছেন। তারা সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে অনেক কিছু শিখতে পারছেন। আশা করি, তারা বাড়িতে বসে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত এপ্রিলের শেষ নাগাদ এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বন্ধ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিপূর্বে সেপ্টেম্বরের আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে না দেওয়ার ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেটাকেই তারা যথাযথ দিকনির্দেশনা বলে মনে করছেন। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম বিদ্যমান অবস্থায় রাখা এবং ছাত্রছাত্রীদের বাসায় রেখে লেখাপড়ার ব্যবস্থা বা বিকল্প পাঠদানের চিন্তা চলছে।