প্রাথমিক শিক্ষকদের উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে পদোন্নতির ফাইল চূড়ান্ত
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও হতে পারবেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার। ধাপে ধাপে পদোন্নতির পর এই পদে নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনার কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। শিগগিরই মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। শুক্রবার রাতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের নিয়মিত ফেসবুক লাইভ আয়োজন ‘ক্যাম্পাস টকে’ এমনটাই জানিয়েছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. ফসিউল্লাহ।
তিনি বলেছেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক থেকে তিন-চারটি পদে পদোন্নতি দেয়ার কাজ এগিয়ে চলছে। তাঁরা ধাপে ধাপে সহকারী প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক হবেন। এরপর প্রশাসনিক তদারকির কাজে অর্থাৎ উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে পদোন্নতি পাবেন।
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় টানতে এমন উদ্যোগের কথা জানিয়ে ডিজি বলেন, শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় করার জন্য পদোন্নতির সুযোগ রাখাটা খুব ভালো একটা পদেক্ষেপ। এটা নিয়ে কাজ চলছে। একটি প্ল্যানও নেয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই পরিকল্পনাটি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। শিক্ষকদের বলব, হতাশার কিছু নেই। এখন অনার্স পাশ অনেক ভালো ছেলে-মেয়েরা শিক্ষকতায় আসছেন। সুতরাং তাদের জন্যও তো আমাদের সুযোগ রাখা দরকার। শুধু প্রধান শিক্ষক না উপজেলা শিক্ষা অফিসারের পদেও বেশিরভাগ পদায়ন শিক্ষকদের থেকে করার চিন্তা করছি। এটা প্রক্রিয়ায় আছে। সরকার সবকিছু জানে। এইগুলো অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে বিবেচনা করছে। খুব শিগগিরই ভালো সিদ্ধান্ত আসবে।
এছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকের নতুন পদ সৃষ্টি নিয়ে জানতে চাইলে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম-আল-হাসান এসে অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছেন। এর মধ্যে একটি হলো সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টি। এখন বিদ্যালয়ে পাঁচটি ক্লাস হচ্ছে। প্রি-প্রাইমারি আগে একটি ছিল এখন আরেকটা বাড়ছে। সেখানে আরেকজন শিক্ষক প্রয়োজন হবে। আবার প্রধান শিক্ষককে সভা-সেমিনার, অফিসসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাঁর কাজের লোডটা কমার জন্য সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদটা সৃষ্টি করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এটা অবশ্যই সহকারী শিক্ষকদের থেকে পদোন্নতি দেয়া হবে। আমি অবশ্যই শিক্ষকদের সামনে আশা দিতে চাই- তাদের সহকারী প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক তারপর সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার হওয়ার পদ খোলা থাকবে। এইভাবে তিন-চারটা জায়গায় যদি তার যাওয়ার সুযোগ থাকে তাহলে শিক্ষকরা অনেক বেশি প্রফেশনালভাবে আন্তরিক হবেন এবং কাজ করবেন।
এদিকে নতুন সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টি নিয়ে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যেই ভিন্নমত রয়েছে। যদি আপত্তি করছেন না প্রধান শিক্ষকরা। তাদের আতঙ্ক বা দ্বন্দ্বের বিষয়ে প্রাথমিকের ডিজি বলেন, তাদের জন্য যেটি ভালো সেটি করার চেষ্টা করব। সর্বোপরি প্রাথমিক শিক্ষার জন্য ভালো হবে এমন উদ্যোগই নিব। আবার এটি অনেক শিক্ষকেরই দাবি, এমনকি প্রধান শিক্ষকরাও চাচ্ছেন যিনি সিনিয়র সহকারী শিক্ষক তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক হবেন। সেখানে থেকে সয়ংক্রিয়ভাবে প্রধান শিক্ষক হবেন। এরপর সেখান থেকে প্রশাসনিক তদারকির কাজে তিনি পদোন্নতি পাবেন। এইগুলো নিয়ে অনেক গবেষণা, স্টাডি হয়েছে।
এছাড়া আমাদের এখন স্কুল চালাতে হলে কমপক্ষে ছয়জন শিক্ষক প্রয়োজন। প্রি-প্রাইমারি আরেক বছর শুরু করব। তাহলে দেখা যাবে- সাতজন শিক্ষক অবশ্যই লাগবে। এই সাতজনের একজনকে যদি সহকারী প্রধান শিক্ষক রাখি তাহলে তাদের কাজগুলো ভাগ করে নিতে পারবেন। একজন শিক্ষাগত বিষয়গুলো দেখলেন অন্যজন প্রশাসনিকগুলো দেখবেন। এটা আমরা তাদের বুঝাতে সক্ষম হবো।
এর আগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব মো. আকরাম-আল হোসেন।
বর্তমানে সারা দেশে ৬৫ হাজার ৬২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এগুলোতে সাড়ে তিন লাখের মতো শিক্ষক রয়েছেন। তবে স্কুলগুলোতে সহকারী প্রধান শিক্ষকের কোনো পদ নেই।