প্রাথমিকের সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে হাইস্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা!
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলায় প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বিভিন্ন কলেজ, স্কুল ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দিয়ে দেয়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ৬৯ নম্বর হেমনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সূতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এমন ১৪ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার পরীক্ষা চলাকালে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ইউএনও বিকাশ বিশ্বাস ভুয়া পরীক্ষার্থীদের শনাক্ত করে বহিষ্কার ও হল থেকে বের করে দেন। বহিষ্কৃতরা হলো- তামান্না, সুমাইয়া, কাওসার, নাঈম, শুভ, লিমন, খন্দকার নাজমুল, ফরিদা, তৃষা, বিথী, মোছা. আনিকা খাতুন, সাগর, জান্নাতীসহ ১৪ জন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত ভুয়া পরীক্ষার্থীদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে জালিয়াতির বেশ কিছু ঘটনা। তাদের অভিযোগ, হিরু ও শরীফ নামের ২ জন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে টাকার লোভ, বিভিন্ন উপহার দেয়ার কথা বলে অভিভাবকদের ভয় দেখিয়ে এমন কাজ করাতে বাধ্য করেছেন। ফলে এমন কাজ করতে আমরা বাধ্য হয়েছেন বলে তারা জানান।
ধোপাকান্দি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী তামান্না বলেন, ‘প্রতিটি পরীক্ষার জন্য পাঁচশ’ করে টাকা দেবে বলে পরীক্ষা দিতে এসেছি। আমরা গরিব মানুষ, টাকার জন্য পরীক্ষা দিতে এসেছি।’
জানা যায়, নতুন জাতীয়করণকৃত ছোট শাখারিয়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠানের এমপিও টেকানোর জন্য এ পন্থা বেছে নিয়েছে। তারা পার্শ্ববর্তী প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া সপ্তম, নবম ও এইচএসসি পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দিয়ে পিএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করাচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের এই অনৈতিক কাজের মুল হোতা ছোট সাখারিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মো. রেজাউল হান্নান। তার মাধ্যমেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।
গোপালপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যে সব নতুন স্কুল এমপিওভুক্ত হয়েছে- এরমধ্যে যেসব স্কুলের ছাত্রছাত্রী নেই তারাই মূলত এ কাজ করেছে। এমপিওভুক্তি টিকিয়ে রাখতে এগুলো করছে তারা। এমন প্রতারণা করার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ বিশ্বাস বলেন, ‘বিভিন্ন কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। সামনের পরীক্ষা গুলোতেও এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’