ইটভাটা বন্ধে ডিসিকে চিঠি দিলেন দ্বিতীয় শ্রেণি ছাত্রী
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০১৯, ০৫:০৪ PM , আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯, ০৬:৫৬ PM
‘মাননীয় ডিসি স্যার, সালাম নিবেন, আমরা দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হযরতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ি। আমাদের স্কুলের পাশে বিপ্লব নামের একজন লোক ইটের ভাটা দিয়েছে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় আমাদের শ্বাস কষ্ট হয়। পরিবেশের ক্ষতি হয়। চোখ জ্বালা করে। এখন আবার স্কুলের পাশে মুক্তা নামের একলোক আরেকটা ভাটা দিতেছে। তাহলে, আমাদের আরো কষ্ট হবে। আমরা কিভাবে বাঁচবো। আপনি আমাদের বাঁচান।’
ইটভাটা বন্ধের এ দাবি কোনো পরিবেশবাদী সংগঠন বা ব্যক্তির নয়। দ্বিতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীর। ইটভাটার কারণে নিজেদের কষ্টের কথা জানিয়ে লিখেছেন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলমের প্রতি। জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হযরতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী মায়েশা মনোওয়ারা মিশু। সহপাঠীদের কষ্টের কথা এইভাবে খোলা চিঠির মাধ্যমে তুলে ধরে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বৃহস্পতিবার সংসদে সরকারি দলের সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ‘ইতোমধ্যে দেশে বিদ্যমান ইটভাটার মধ্যে ৭১ দশমিক ৬৪ ভাগ ইটভাটাকে উন্নত প্রযুক্তিতে রূপান্তর করা হয়েছে’। তিনি বলেন, ‘এসব উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটায় বায়ু দূষণসহ অন্যান্য পরিবেশ দূষণ তুলনামূলক কম হবে’।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চিঠিটি আমার নজরে আসার পর শিশুর বাবার মোবাইলে ফোন দিই। তিনি জানান, ওই স্কুলটির পাশের ইটভাটা থেকে কালো ধোঁয়া বের হয়। আমাদের পরিবেশে এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা বাদ পড়ছে না।’
মিশুর বাবা আরও বলেন, শিশুরা স্কুল থেকে এসে আমাদের অভিযোগ করো— তাদের শ্বাস কষ্ট হয়, চোখ জ্বালা করে। আরও বেশি আতঙ্কের কথা হচ্ছে, ইতোমধ্যে আরেকটি ইটভাটা স্থাপনের কাজ চলছে। ফলে শিশুসহ সবাই মারাত্মক পরিবেশ দূষণের শিকার হতে চলছে।
জেলা প্রশাসকের কাছে খোলা চিঠি লেখার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফেসবুকে অনেককে আন্দোলন করতে দেখছি। এছাড়া আমরা গরীব মানুষ, অফিস আদালতে গিয়ে অভিযোগ করা সম্ভব হয় না। তাই আমার মেয়েকে বলি, ‘তোমাদের কষ্টের কথা লিখে দাও। এটি ফেসবুকে দিলে ডিসি স্যার দেখবেন। তোমাদের কষ্ট শুনে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন। তোমাদের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসবেন।’
আরো দেখুন: শিক্ষক হতে এসে ছাত্রলীগের হামলার শিকার চবি শিক্ষার্থী
এ বিষয়ে জানতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলমের মোবাইল নম্বরে কল দিয়েছে। তবে কল রিসিভ না হওয়ায় জেলা প্রশাসকের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।