৯৯ বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান!

  © টিডিসি ফটো

ভবনের ছাদের কোনও অংশে পলেস্তারা নেই। কোনও কোনও অংশে আবার পিলারের ভেতরের লোহার রডও দেখা যাচ্ছে। অনেক জায়গাতেই আবার বড় বড় ফাটল। এমনই চিত্র চোখে পড়ে লক্ষীপুর সদর উপজেলার পিয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের। বিদ্যালয়টির বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না থাকার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনেই চলছে পাঠদান।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদানের সময় প্রায়ই খসে পড়ছে পলেস্তারা। ফলে আহত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যথাসম্ভব ব্যবস্থা নেয়া না হলে যেকোনো সময়ই বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কেবলমাত্র উত্তর পিয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নয়, জেলার প্রায় একশত বিদ্যালয় ভবনের একই দশা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তালিকা অনুযায়ী লক্ষীপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭৩২টি। এর মধ্যে ৯৯টি বিদ্যালয় ভবনের অবস্থা খুবই খারাপ। বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না থাকার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে। একারণে বিদ্যালয়ে আসার আগ্রহও হারিয়ে ফেলছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। আর বাড়ছে ঝড়ে পড়াদের সংখ্যা।

এ বিষয়ে উত্তর পিয়ারপুর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শাহে জানান, বিদ্যালয় ভবনটির প্রতিটি কক্ষই দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ। বিকল্প কোনও ভবন না থাকার ফলে এসব কক্ষেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে। ফলে আতঙ্কে থাকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেশ কয়েকবার জানানোর পরও কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এদিকে সদর উপজেলার তালহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে প্রথম শ্রেণি ও তৃতীয় শ্রেণির কক্ষ দুটিতে আপাতত পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে অন্য একটি কক্ষে পালাক্রমে ওই দুই শ্রেণির পাঠদান চলছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছাম্মদ হাছিনা আক্তার বলেন, জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকরা ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করছেন। ভবনটি ধসে পড়ে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। সংস্কারেও কোনও লাভ হবে না। ভবনটি ভেঙে নতুন করে ভবন নির্মাণ করা হলে এ সমস্যার সমাধান হবে।

এবিষয়ে জেলার শিক্ষা কর্মকর্তা আবু জাফর মো. সালেহ জানান, এরই মধ্যে জরাজীর্ণ সকল বিদ্যালয়ের তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। চলতি অর্থবছরে যেসব বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেসব বিদ্যালয়ের সংস্কার চলছে। তিনি আরও বলেন, এবছর না হলেও আগামী অর্থবছরে জরাজীর্ণ বিদ্যালয় ভবন সংস্কার করা হবে। আশা করছি সেই সময় জেলায় কোনও বিদ্যালয় ভবন আর ঝুঁকিপূর্ণ থাকবে না।


সর্বশেষ সংবাদ