প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের গ্যারেজ নির্মাণে ১০ লাখ টাকা অনিয়মের অভিযোগ

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের জন্য নির্মাণ করা গাড়ির গ্যারেজ
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের জন্য নির্মাণ করা গাড়ির গ্যারেজ  © টিডিসি ফটো

সাড়ে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে ফেনী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের জন্য গাড়ির গ্যারেজ নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দেয়া নির্মাণের ব্যয় নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গাড়ির গ্যারেজ নির্মাণ ব্যয় নিয়ে অনিয়ম রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পিইডিপি-৪’র প্রকল্পের আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ফেনী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের গ্যারেজ নির্মাণে সাড়ে ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। দরপত্র আহ্বান করা হলে প্রকল্পের কার্যাদেশ পান ফেনী সদরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শুসেন চন্দ্র শীলের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘সেতু এন্টারপ্রাইজ’। 

পরে প্রকল্পটি দেখভালের দায়িত্ব পেয়ে গত বছরের জুন মাসে গ্যারেজ নির্মাণ কাজ শুরু করেন সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর শুক্কুর মানিক। তিনি গ্যারেজের কাঠামো নির্মাণ শেষ করলেও রঙ ও দেওয়ালের প্লাস্টারের কাজ বাকী ছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে মানিক আত্মগোপনে চলে যান। পরে মাইন উদ্দিন নামে আরেক ঠিকাদার দায়সারাভাবে গ্যারেজটির অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

ফেনী গ্যারেজ এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নির্মাণ প্রকৌশলী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, স্বাভাবিক হিসেবে ৫ থেকে সাড়ে ৫ লাখ টাকার মধ্যে গ্যারেজটি নির্মাণ করা যেত। এলজিইডি দরপত্রে অধিক মূল্য দেখানো হয়েছে। নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ না করে, বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই বিল উত্তোলন করা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বরাদ্দের মেয়াদ শেষ হলে টাকা ফেরত চলে যাবে। তাই আগেই বিল উত্তোলন করা হয়। এছাড়াও গ্যারেজ নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারও করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে ফেনী জেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফরিদ আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘দায়সারাভাবে গ্যারেজটি নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে আমার সাথে ঠিকাদার ও মিস্ত্রিদের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়েছে।’ 

এ বিষয়ে এলজিইডি ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আল মাহমুদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেশি থাকায় দরপত্রে মূল্য বেশি ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৭ শতাংশ ভ্যাট। গ্যারেজ নির্মাণে কোন দুর্নীতি হয়নি। এলজিইডির কোন কর্মকর্তা এতে জড়িত নয়।’

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অফিসের গাড়ির রাখার সুবিধার জন্য অনেক কষ্ট করে ঢাকা থেকে প্রকল্পটি অনুমোদন করে আনা হয়েছে। শিক্ষা অফিসের নতুন ও পুরাতন দুইটি গাড়ি রয়েছে। সেগুলো রাখার জন্য কোন ব্যবস্থা না থাকায় গ্যারেজটি নির্মাণে মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছিল।

গ্যারেজ নির্মাণে ব্যয় প্রসঙ্গে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি উপজেলা প্রকৌশলী জানেন। আমাদের কাছে দরপত্রের কোন অনুলিপি নেই এবং এটি নির্মাণে কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না।’


সর্বশেষ সংবাদ