১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৪

প্রাথমিক শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড কত দূর, আজ বসছে সব সংগঠন 

১০ম গ্রেডে বেতন দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা  © ফাইল ছবি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডে বেতন দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন। তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার তা মানেনি। অন্তবর্তী সরকার তাদের ‘যৌক্তিক’ দাবি মেনে নেবে বলে আশা করছেন তারা। দাবি আদায়ে এবার সহকারী শিক্ষকদের সব সংগঠন একযোগে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা আজ সোমবার (১৪ অক্টোবর) সভা করে কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি সোমবার সকালে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘১০ম গ্রেডের দাবি আদায়ের ব্ষিয়ে আমরা সব সংগঠনের নেতারা একসঙ্গে বসার বিষয়ে সম্মত হয়েছি। আজ সন্ধ্যা ৭টায় আমাদের সভা আছে। সেখানে কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

১০ম গ্রেড দিলে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) বা প্রাথমিকের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, যারা ১১তম গ্রেডে যোগদান করেন, সেক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরাসরি পদোন্নতির মাধ্যমে যদি এসব পদ পূরণ করা হয়, তাহলে কোনও সমস্যা থাকবে না। প্রয়োজনে তাদের তখন নবম গ্রেড বা আরও উচ্চতর গ্রেড দিতে পারবে। আমরা ১০ম গ্রেড ছাড়া বিকল্প কিছু ভাবছি না।’

জানা গেছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো হয়। ৩ লাখ ৭৫ হাজার শিক্ষকের বেতন বাড়িয়ে আদেশ জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে তারা ১৩তম গ্রেডে (১১ হাজার টাকার স্কেল) বেতন পাচ্ছেন। এর আগে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা বেতন পেতেন ১৪তম গ্রেডে (১০ হাজার ২০০ টাকা)। আর প্রশিক্ষণবিহীনরা পেতেন ১৫তম গ্রেডে (৯ হাজার ৭০০ টাকা)। 

শিক্ষকদের অভিযোগ, তাদের দাবি যৌক্তিক হলেও আমলাতান্ত্রিক প্রতিবন্ধকতার কারণে ১০ম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন না। একজন শিক্ষক ১৩তম গ্রেডে সবমিলিয়ে ১৭ হাজার ৬৫০ টাকা বেতন পান। এ বেতনে চলা তাদের জন্য কষ্টকর। সংসার খরচই ঠিকমতো চলে না। এ কারণেই অনেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় না এসে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। 

আরো পড়ুন: চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপনের দাবিতে চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান আজ

বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা স্নাতক বা সমমান করা হয়েছে। তবে দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদাও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের। অথচ একই যোগ্যতা নিয়ে পিটিআই- সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১০ম (দ্বিতীয় শ্রেণি) দেওয়া হয়। একই যোগ্যতা (স্নাতক বা সমমান) নিয়ে অন্য দপ্তরেও ১০ম গ্রেড দেওয়া হচ্ছে। মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক, সহকারী গ্রন্থাগারিক বা ক্যাটালগার, পুলিশের এসআই, ইউনিয়ন পরিষদ সচিব, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাও এ গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন।

শিক্ষকরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড দেওয়া হলে মেধাবীরা এ পেশায় আসতে সংকোচ করবেন না। বিসিএসের পরই তাদের দ্বিতীয় পছন্দ থাকবে প্রাথমিকের শিক্ষক হওয়া। তাদের প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে পেতে হলে ১০ম গ্রেডের বিকল্প নাই। এ গ্রেড বৈষম্য দূর করতে সরকার ভূমিকা রাখবে বলে আশা তাদের।