প্রাথমিকের নিয়োগে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ: তদন্ত প্রতিবেদনে যা আছে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তিনজন ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। যে তিনজন রিট করেছেন, তাদের কেউ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। আদালতের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এই কমিটিতে এনএসআই, গোয়েন্দা বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছিলেন। এই প্রতিবেদনের আলোকে রেজাল্ট বাতিল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে জানানো হয়েছে। কাজেই প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ভিত্তিহীন। একটি চক্র নিয়োগ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করতে রিট করেছিলেন। আমরা বিষয়টি আদালতকে জানিয়েছি। আদালত প্রতিবেদন দেখে এ বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা দেবেন। আদালতের নির্দেশনা পেলে চলতি মাসেই তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ আজ মঙ্গলবার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল কবে প্রকাশিত হবে তা নির্ভর করছে আদালতের উপর। আমরা প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছি। আদালতের নির্দেশনা পেলে দ্রুত ফল প্রকাশ করা হবে।
জানা গেছে, তৃতীয় ধাপের ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১টি জেলার পরীক্ষা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার সংশোধিত ফল গত ২২ এপ্রিল প্রকাশিত হয়। এতে ৪৬ হাজার ১৯৯ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হন। আর এই পরীক্ষা ২৯ মার্চ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২৮ মে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) মৌখিক পরীক্ষাসহ নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণসংক্রান্ত হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে মৌখিক পরীক্ষা নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তবে এই নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গণমাধ্যমে আসা অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। অনুসন্ধান করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়।
২০২৩ সালের ১৪ জুন এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ২৯ মার্চ এই দুই বিভাগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের লিখিত (এমসিকিউ) পরীক্ষার ফল গত ২১ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপের (৩টি পার্বত্য জেলা ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১টি জেলা) লিখিত পরীক্ষার সংশোধিত ফল পরের দিন প্রকাশ করা হয়।