সহকারী শিক্ষক পরীক্ষায় জালিয়াতি করে ছাড়া পেলেন এমপির মেয়ে
বগুড়ায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি করতে গিয়ে আটক হওয়ার পরও ছাড়া পেয়েছেন উম্মে হামিদা নামের এক পরীক্ষার্থী। জানা যায়, প্রভাবশালী বাবার হস্তক্ষেপে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। এক কেন্দ্র থেকে হামিদাকে আটক করা হলেও পরে সসম্মানে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেয় পুলিশ। শুক্রবার পরীক্ষা চলাকালে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করার অপরাধে ১৯ জনকে আটক করেন কেন্দ্র পরীক্ষক ও পরিদর্শকরা। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন।
উম্মে হামিদা বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবর রহমান মজনুর সৎমেয়ে। তাঁর মায়ের নাম শিল্পী বেগম। তিনি আগের ঘরের মেয়ে হামিদাকে নিয়ে এমপি মজিবরের সঙ্গে থাকেন। হাতেনাতে আটকের পরও হামিদাকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় জেলাজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জানা যায়, শুক্রবার সকাল ১০টায় নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর পর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে উম্মে হামিদাসহ চারজন আটক হন। হামিদা ১১০৭ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। কেন্দ্রের বাইরে হামিদার মা শিল্পী বেগমও ছিলেন। হামিদাকে আটক করলে মা শিল্পী বেগম ডিবি কার্যালয়ে যান। পরে রাত ১০টার পর হামিদাকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে আবারও কেন্দ্রে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। সেখান থেকে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।
ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, ওই পরীক্ষার্থী ডিবি হেফাজতে ছিলেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন সবকিছু দেখছে।
মামলার বাদী সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পরিতোষ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘রাতে থানায় তিনজনকে পেয়েছি। এর বেশি কিছু আমরা জানি না। এখানে আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে মামলার বাদী হয়ে থাকি।’
শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিদা আক্তার বলেন, ‘এটা নিয়মিত মামলার বিষয় হওয়ায় কক্ষ পরিদর্শকরা ব্যবস্থা নিয়েছেন। আটকদের নাম জানা নেই।’
হামিদার মা শিল্পী বেগম বলেন, ‘ওরা না বুঝে হয়তো মেয়েকে ধরে নিয়ে যায়। পরে স্যরি-টরি বলে মাফ চেয়ে ছেড়ে দিয়েছে।’
এ ব্যাপারে মজিবর রহমান মজনু এমপি বলেন, ‘ঘটনা ঘটে থাকলেও জানা নেই।’
বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির মেয়ে আটক আছেন, তা তিনি জানেন না। যাদের কাছে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ছিল তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।